উত্তরাঞ্চলের মধ্যে পাবনার সুজানগর উপজেলাকে পেঁয়াজ ভাণ্ডার বলা হয়। এ উপজেলায় উত্তরাঞ্চলের মধ্যে সব চেয়ে বেশি পেঁয়াজ আবাদ হয়। সেকারণে সারা দেশে পেঁয়াজ সংকট বা দাম বাড়লেও এ উপজেলায় দাম বাড়ার কথা নয়। এমনকি এখানে সংকট দেখা দেওয়ারও কথা নয়। কিন্তু বর্তমানে সারা দেশের ন্যায় এ উপজেলায়ও বেশ দাম বেড়েছে। তবে হাট-বাজারে পেঁয়াজের কোন সংকট নেই।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ১৬ হাজার ৫‘শ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করা হয়েছিল। অনুকূল আবহাওয়া আর সঠিক সময়ে সার বিষ প্রয়োগ করায় ফলনও হয়েছিল বেশ ভাল। তবে পেঁয়াজের ভরা মৌসুমে কৃষক তেমন দাম পায়নি। উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের পেঁয়াজ চাষী কামরুজ্জামান বলেন পেঁয়াজের ভরা মৌসুমে উপজেলার হাট-বাজারে প্রতিমণ পেঁয়াজ মাত্র ৭‘শ থেকে ৮‘শ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বলা চলে কৃষক তখন পানির দরে পেঁয়াজ বিক্রি করেছে। এতে তার উৎপাদন খরচও উঠে নাই। ফলে বর্তমান বাজারে কৃষক প্রতিমণ পেঁয়াজ ৩হাজার ৩২‘শ টাকা দরে বিক্রি করে ভরা মৌসুমের ঐ লোকসান পুষিয়ে নিচ্ছে। তবে ভুক্তভোগী ক্রেতারা বলছে বর্তমান বাজার অস্বাভাবিক। স্বাভাবিক বাজার হলো প্রতিমণ পেঁয়াজ ১৮‘শ থেকে ২হাজার টাকা। উপজেলার মানিকদীর গ্রামের হায়দার আলী বলেন গত এক সপ্তাহ আগেও হাট-বাজারে প্রতিমণ পেঁয়াজ পাইকারী বিক্রি হয়েছে ২হাজার থেকে ২২‘শ টাকা দরে। কিন্তু মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিমণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩হাজার থেকে ৩২‘শ টাকা দরে। আর এ হিসাবে খুচরা বাজারে দাম বেড়ে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০থেকে ৮৫টাকা দরে যা, অস্বাভাবিক চড়া। উপজেলার মানিকহাট গ্রামের ভুক্তভোগী ক্রেতা ইউসুফ আলী মোল্লা বলেন বর্তমান বাজারে কৃষক প্রতিমণ পেঁয়াজ বিক্রি করে উৎপাদন খরচের চেয়ে প্রায় দিগুণ লাভ করছে। কিন্তু বর্তমান ঐ বাজার অধিকাংশ ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। তাছাড়া হাট-বাজারে পেঁয়াজের আমদানিও রয়েছে যথেষ্ট। ফলে ভুক্তভোগী ক্রেতারা বর্তমান এ বাজার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রওশন আলী বলেন কেউ হাট-বাজারে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করলে কিংবা অধিক মুনাফা লাভের আশায় চড়া দামে বিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।