ঝিনাইদহের শৈলকুপায় করোনা সচেতনায় করোনা নাটক নিয়ে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হীরক মুশফিক। শৈলকুপার কুতি সন্তান ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এ- পারফর্মেন্স স্টাডিজ বিভাগের এই শিক্ষকের উদ্যোগে শৈলকূপা কেন্দ্রীক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে করোনা অসচেতন মানুষের সচেতন করার জন্য গড়ে তোলা হয় “করোনা স্কোয়াড এক” নামে স্বেচ্ছাসেবী দল।
করোনাকালে যখন সকল ধরনের সাংস্কৃতিক চর্চা বন্ধ ঠিক সেই সময়ে নাটকের মাধ্যমে মানুষের সচেতন করার ব্যতিক্রমী প্রচেষ্টা সাড়া ফেলেছে মানুষের মনে।
উদ্ভাবক ও নির্দেশক শিক্ষক হীরক মুশফিক নিজ চিন্তা চেতনা খেকে এটির নাম দিয়েছেন ‘করোনাট্য’। করোনাকালীন সময়ের নাটক বিধায় এর নামকরণ করা হয়েছে করোনাট্য বলে জানা যায়। তিনি এই করোনাট্য নিয়ে বিরামহীনভাবে ছুটে চলেছেন বিবেকের তাড়নায় এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায়।তার এই নাটক দেখে সমাজের একটি মানুষও যদি সচেতন হয় তবেই তার এই স্বার্থকতা।
অসচেতন মানুষকে করোনার ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করা, সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে সাধারণকে সহায়তা করা, কোয়ারেন্টাইন, লকডাউন সম্পর্কিত ধারণা প্রদানে বিশেষ একটি নাট্য প্রয়োগ করছেন তিনি এবং তার দল। অভিনয় করেন দুই থেকে সাতজন অভিনেতা। স্থানীয় বাজার, চা বা সবজি দোকান, মোড়, মোটকথা জনাকীর্ণ স্থানে প্রদর্শিত হয় এই পরিবেশনা। করোনা বিষয়ে অসচেতন সাধারণ মানুষ এই নাট্যের দর্শক। যতদূর জানা যায়, করোনা নাটক নিয়ে অসচেতন মানুষের সচেতন করার উদ্যোগ বাংলাদেশে এটিই প্রথম।
অন্তত ৮ টি শর্ত মেনে এই নাট্য প্রক্রিয়াটি নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করার চেষ্টা করছেন বলে জানান করোনা স্কোয়াড প্রতিষ্ঠাতা হীরক মুশফিক। তিনি বলেন ‘নাট্যের এমন প্রয়োগ নানা সময়ে নানা ভাবে হয়েছে, যেহেতু নাটক একটি সম্মিলিত শিল্প, ফলে এই করোনাকালে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে এটির পরিবেশনা সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ। করোনা সচেতনতায় করোনা স্কোয়াড এর আগে দেশে বা দেশের বাইরে আর কেউ এভাবে সরাসরি নাট্য পদ্ধতির প্রয়োগ করেছে এমন তথ্য জানা নেই।
শিক্ষক হীরক মুশফিক এর দিক নির্দেশনায় করোনার শুরু থেকে শৈলকুপার কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সেবার গাড়ি নামে স্বেচ্ছাসেবী দল গঠন করে তাদের মাধ্যমে ত্রাণ তৎপরতা,মাস্ক বিতরণ, বৃক্ষরোপন, ওষুধ, অর্থ সহায়তা প্রদানের মতো নানা স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করে চলেছে। করোনাকালীন সময়ে শিক্ষক হীরক মুশফিকের একের পর এক এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ।তার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ছড়িয়ে যাক দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই প্রত্যাশা সবার।