খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা ইউনিয়ানের শোলগাতিয়া বাজার সংলগ্ন বাাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) বেড়িবাঁধের জায়গা কতিপয় প্রভাবশালী ভূমি দস্যু কর্তৃক অবৈধ ভাবে দখল করে গড়ে তুলেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখল চলে আসলেও কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এভাবে দখল চলতে থাকলে বেড়ি বাঁধের এই স্থান দিয়ে জোয়ারের সময় নদীর উপচেপড়া পানি প্রবেশ করে শোলগাতিয়া গ্রামসহ বাজার প্লাবিত হওয়ার আশংখ্যা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসির মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে যেয়ে এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানা যায়, খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শোলগাতিয়া বাজারের পাশ দিয়ে বঁয়ে গেছে হরি নদী। এই নদী পাশেই রয়েছে শ্রী পঞ্চনন মন্দীর। মন্দীরের পাশ নিয়ে পাউবোর নদী রক্ষা বাঁধ। অবৈধ ভাবে দখল করে এই বাঁধের উপর একে একে গড়ে তোলা হয়েছে ৬টি দোকান ঘর। এরমধ্যে ৩ নং শোলগাতিয়া ওয়ার্ডের ব্লু-গোল্ডরের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল মোল্লা রয়েছে ৪টি দোকান। এ ভাবে ওয়াপদার বেড়িবাঁধ দখল হতে থাকলে বাঁধ খুব দ্রুত বিলিন হয়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিবে । তখন নদীর জোয়ারের পানিতে শোলগাতিয়া বাজারসহ গ্রামটি তলিয়ে যাবে। তাছাড়া মন্দির সংলগ্ন মহা শ্মশানের পাশে দোকান গড়ে উঠায় শ্মশানের শবদেহ পোঁড়ানো ছাই উড়ে এসে জড়ো হচ্ছে দোকানগুলোতে রাখা খাবারসহ অন্যান্য পণ্যের উপর। অন্যদিকে বাঁধ দখল করে দোকান নির্মাণ করায় জনসাধারণকে চলাচলের সমস্যা হচ্ছে।
সরেজমিনে গত সোমবার গিয়ে দেখা গেছে, বাঁধের উত্তর দিক থেকে বাঁধের উপর ৩ নং শোলগাতিয়া ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সদস্য শিশির সাহা সম্প্রতি দোকান গড়ে তুলেছেন। চারিপাশে বাঁধ পুতে তার উপর চিনের ছাউনি দিয়ে দখল করে রেখেছেন। ঠিক তার পরে রয়েছে ৩ নং শোলগাতিয়া ওয়ার্ডের ব্লু -গোল্ডরের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল মোল্লা মুরগি বিক্রির দোকান এবং সার ও কীঁটনাশকের দোকনসহ ৪টি দোকান। তারপাশেই আরও একটি দোকান। তাছাড়া অনেকে বাঁশ পুঁতে নেট দিয়ে জায়গা দখল করে রেখেছেন। এ সময় কথা হয় ইমরুল মোল্লা সাথে। তিনি বলেন, আমাদের কোন সরকারি কাগজপত্র নেই। দখল সূত্রে এই জমি আমরা ভোগদখল করি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, এই মন্দিরটি ও বাঁধটি আমাদের ইউনিয়ানের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক হাইব্রিড আওয়ামী লীগ সদস্য (বিএনপি থেকে সম্প্রতি আ.লীগে যোগদান করা) আর ব্লু-গোল্ডের নেতা যেভাবে দখল শুরু করেছে কয়েক দিনের মধ্যে হয়ত নদী আর মন্দীরটিও দখল করে নেবে। তাছাড়া প্রতি মুহূর্তে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আর দোকানের কারণে বাঁধ নিচু হয়ে যাচ্ছে। যেকোন সময় নদীর পানি বাঁধের নিচু স্থান দিয়ে প্রবেশ করে শোলগাতিয়া গ্রাম প্লাবিত হতে পারে। তখন বাঁধ সংস্কারের প্রয়োজন পড়লে দোকানের কারণে তা সম্ভব হবে না।
ব্লু-গোল্ডের রুদাঘরা ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি মো. মোতালেব গোলদার বলেন, প্রথম যখন ওই জায়গা দখল শুরু হয় তখন এস,ও সাহেবকে নিয়ে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেই। তারপর আর সেখানে যাওয়া হয়নি। তাছাড়া আমি আজ দায়ীত্বে আছি কাল নেই, কাকে কি বলব? তারপরও বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাবো। এ বিষয়ে জানতে চাইলে
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) খুলনা-১ উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান বলেন, 'আমাদের জনবল সংকটের কারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া এটা আমার জানা ছিল না। এখন আমি খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি'।