কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি. (কাল্ব) এর ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে এক ঋণ গ্রহিতা শিক্ষক। বুধবার বেলা ১১টায় নাগেশ্বরী প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ পাঠ করেন হয়রানীর শিকার সাপখাওয়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ওই সমিতির গ্রাহক সিরাজুল ইসলাম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম খান জাহিদ, আফজাল হোসেন, আনিছুর রহমান, নেফাজুল হকসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
অভিযোগে তিনি জানান, একাধিকবার সমিতির আয়-ব্যয় হিসাব ও পরিচালনার অসঙ্গতি প্রসঙ্গে অভিযোগ করলেও তা কর্নপাত করেননি এমনকী তারা অসঙ্গতি ঢাকার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কাল্ব-এর ঢাকা অফিসের সেক্রেটারী এমদাদ হোসেন মালেক কর্তৃক গত ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই জারিকৃত পত্রের আলোকে জানা যায়, কাল্বের ঋণ মুনাফার হার শতকরা ১৮% করা হয়েছে যা ওই বছরের ১ জুলাই হতে কার্যকরের নির্দেশনা রয়েছে। অথচ বর্ণিত প্রজ্ঞাপন আমলে না নিয়ে তারা নিজস্ব স্বার্থ হাসিলের জন্য অধিক মুনাফা লাভের আশায় ২৪% হারে মুনাফা সদস্যদের কাছ থেকে আদায় করে আসছে। এছাড়াও অভিযোগকারী শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম সমিতি হতে ঋণ গ্রহণের সময় তাকে ঋণ নীতিমালা প্রদান করেন যাতে স্পষ্টভাবে ৬ নং- দফায় উল্লেখ্য করা হয়েছে যে “সকল ঋণের উপর বাৎসরিক ২৪% হিসাবে যা পূর্ববর্তী মাসের ঋণের স্থিতির উপর মাসিক ২% হারে সেবামূল্য আদায় করা হয়”। কালব এর নীতিমালা অনুযায়ী নীতিমালা অনুযায়ী সিরাজুল ইসলামকে ঋণ প্রদান করেন এবং ২% হারে ঋণের সেবা মূল্য আদায় করেন অথচ যা হওয়া উচিত ছিলো ১.৫% হারে অর্থাৎ বাৎসরিক ১৮% হারে। এই অতিরিক্ত অর্থ কী করেছে বা কোন খাতে ব্যয় ব্যয় করেছেন বা সমিতির দৃষ্টান্ত কোন উন্নয়ন কাজে ব্যয় করেছেন এই প্রসঙ্গেও তারা কোনো প্রকার জবাব দেননি বলেও অভিযোগ রয়েছে।
অপরদিকে বর্তমান প্রচলিত ঋণের নীতিমালা অনুযায়ী ঋণের সুদের হার ১ অংকের হতে হবে এই মর্মে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা থাকলেও অভিযুক্তরা বাংলাদেশের প্রচলিত আইনকে তোয়াক্কা না করে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এখন পর্যন্ত ২৪% হারেই সুদ আদায় করে আসছে।
এছাড়াও তাদের মনগড়া নীতিমালা অনুযায়ী ঋণ প্রদানের সময় ঋণি সদস্যের কাছে রিকুজিশন স্লিপসহ সকল ফাঁকা চেকের পাতায় স্বাক্ষর নিয়ে পুরো বই জমা নেন। এতে করে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে শিক্ষক ও কর্মচারীগণ।
এদিকে ৪ বছর মেয়াদী কিস্তিতে ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করে আসছিলেন সিরাজুল ইসলাম। তবে ওই ঋণের সুদের হার ১৮% হলেও তারা অবৈধভাবে ২৪% হারে সুদ ধরলে তিনি কয়েকটি কিস্তি বন্ধ করে দেন। এমন সময় তারা ৪ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই মাত্র ৭ মাসের মাথায় ওই সমিতি মামলা করেন ৩ লাখ ৪৯ হাজার টাকার অথচ তারা সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি সংবাদ সম্মেলনে ৫ লাখ ৩৩ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। উপর্যুক্ত অনিয়ম ছাড়াও সমিতির সভাপতি, সম্পাদক ও ব্যবস্থাপকসহ কয়েকজনের একটি চক্র নানাভাবে অনিয়ম করে শিক্ষকদেরকে হয়রানী ও রক্ত চুষে খেয়ে আসছে।