গোটা উপজেলায় মাদকের বিস্তৃতি ও জুুুয়ার দৌরাত্ব নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বক্তারা। গতকাল বুুধবার সরাইল উপজেলা মাসিক আইন-শৃঙ্খলা সভার সদস্যরা এ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সরাইলের প্রধান সড়কে সিএনজি চালিত অটোরিকশার যত্রতত্র পার্কিং-এর বিষয়টিও ৬ বছর শুধু আলোচনায় বন্দী। গুরূত্বপূর্ণ বিষয় শুধু আলোচনায় সীমাবদ্ধ থাকার কারণে অনেকে বক্তব্য দিতেও অনিহা প্রকাশ করেন। সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফারজানা প্রিয়াংকার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় ইউপি চেয়ারম্যানদের বক্তব্য ছিল শুধু মাদকের বিস্তৃতি নিয়ে। নিবন্ধন বিহীন মটর সাইকেল ব্যবহার করে এক শ্রেণির যুবকের মাদক পাচার সহ নানা অনৈতিক কর্মকান্ডের ফিরিস্তি। একসময় কালিকচ্ছ চামার বাড়িতে ছুলাই মদ ও বিক্রয়ের বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়। গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে মাদক বিক্রিতে বাঁধা দেওয়ার কারণে সেখানে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। বেশ কয়েকজন আহত ও হন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চামার বাড়ির মদ নিয়ে এ সভায় গত ১২ বছর ধরে আলোচনা হচ্ছে। রেজুলেশন আছে। দেদারছে উৎপাদন ও বিক্রির ফলে যুব সমাজ ধ্বংস হচ্ছে। কোথায় প্রশাসন? আজ পর্যন্ত মদের সেই কারখানা কি বন্ধ করতে পেরেছেন? না পারলে কেন পারলেন না? সেই দিন রাতে কি সেখানে কি ঘটে ছিল সবাই জানে। যারা মাদকের বিরূদ্ধে প্রতিবাদ করেছে তাদের বিরূদ্ধে কার ইশারায় মামলা তাও জনগণ জানেন। কিছু লোক ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন। সাদা ধূঁতিপড়া কিছু লোক হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা লাগানোর ষড়যন্ত্রে মেতেছেন। না আপনাদের এ উদ্যেশ্য বাস্তবায়ন হবে না। আমরা আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা হিন্দুদের সবচেয়ে বেশী ভালবাসি। আমরা আপনাদের সম্মান করি। শ্রদ্ধা করি। তার অর্থ এই নয় যে আপনারা যা ইচ্ছে তাই করে সামাজিক পরিবেশ নষ্ট করবেন। এটা কোন ভাবেই করতে দেয়া হবে না। চামার বাড়ির মদ উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। সৈয়দটুুলায় ত্রিফাল ঝুলিয়ে জুয়ার আসর, সকাল বাজার ও চুন্টার করাতকান্দি এলাকা বড় ধরণের জুয়া নিয়মিত হচ্ছে। লক্ষ লক্ষ টাকার খেলা হচ্ছে। পুলিশ জানে না। এটা বিশ্বাস যোগ্য নয়। আর না জানলেও আজকে জানালাম। মনে রাখবেন মদ ও জুয়ার বিরূদ্ধে প্রয়োজনে সরাইলের লোকজন রাস্তায় নামবেন। এ সময়ে নদীর প্রবাহ বন্ধ করা যাবে না। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের এ বিষয়ে স্থানীয় ভাবে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এসি ল্যান্ড। এ ছাড়া সভায় বক্তব্য রাখেন- মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম, সমাজসেবা কর্মকর্তা আবু নাঈম মৃর্দা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছা. ফাতেমা বেগম, সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার, সরাইল থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা (এস আই) মো. জাকির হোসেন, কালিকচ্ছ ইউপি চেয়ারম্যান সরাফত আলী, শাহজাদাপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম খোকন, শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাজিব আহমেদ রাজ্জি, নোয়াগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান কাজল চৌধুরী, পানিশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান মো. দ্বীন ইসলাম, পাকশিমুল ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম, অরূয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, সরাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খান, কৃষকলীগের সভাপতি ও সাংবাদিক মো. শফিকুর রহমান, হাজী আবু তালেব ও শাহার উদ্দিন প্রমূখ। বক্তারা বিট পুলিশিং কার্যক্রমের প্রশংসা করে বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ তৃণমূলে মাদক প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়ার এখনই সময়। কারণ আইন-শৃঙ্খলা সভার প্রত্যেক সদস্যের উপরই দায়িত্ব রয়েছে সামাজিক ভাল কাজ গুলো করার। আর অপরাধ প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার।