রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার ২নং রাইখালী ইউনিয়নের ডলুছড়ি এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় রাইখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বিপ্লব সেন লাতুসহ আরো ২ জন গুরুতর আহত হয়েছে।
বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। আহত অন্যান্যরা হলেন, ইউনিয়ন যুবলীগ কর্মী মোঃ তৌহিদুল ইসলাম তপু (২৭) এবং নৌকার মাঝি অবিনাশ দাশ (৪৫)। তারা সকলেই রাইখালী ইউনিয়নের নারানগিরির বাসিন্দা।
আহতদের মধ্যে যুবলীগ কর্মী তৌহিদুল ইসলাম তপুর আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাকে প্রথমে উপজেলা সদর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে পরে রাতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আহত যুবলীগ সভাপতি বিপ্লব সেন লাতু এবং নৌকার মাঝি অবিনাশ দাশ বর্তমানে উপজেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
উপজেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, আহত ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বিপ্লব সেন লাতুর মাথায় ৩টি সেলাই করা হয়েছে।
আহত যুবলীগ সভাপতি বিপ্লব সেন লাতু হাসপাতালে এই প্রতিবেদককে জানান, তিনিসহ আরোও ২ জন বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টায় সাংগঠনিক কাজে রাইখালীর ডলুছড়ির আলু মং মারমার বাড়ীতে অবস্থান করছিলেন। এরপর তারা রাত ১১ টায় ঘর থেকে বের হবার সাথে সাথে অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন পাহাড়ী সন্ত্রাসী অতর্কিত ভাবে হামলা করেন এবং বড় বড় লাঠি দিয়ে তাদের আঘাত করেন। এ সময় তাদের আত্মচিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যান।
পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ ছিদ্দিকীর সহায়তায় তাদেরকে উপজেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। বিপ্লব সেন লাতু জানান, মুখ বাঁধা থাকায় তারা এদের চিনতে পারে নাই। তিনি সুস্থ হলে থানায় মামলা করবেন বলে জানান।
এদিকে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে চন্দ্রঘোনা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, তিনি বিষয়টি জেনেছেন, তবে এই বিষয়ে কেউ এখনো থানায় মামলা করেননি। কেউ যদি মামলা করেন তাহলে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে আহত ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বিপ্লব সেনকে হাসপাতালে দেখতে এসে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অংসুইছাইন চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, অস্ত্রধারী জে এস এস এর সন্ত্রাসীরা এই হামলা করেছে। তিনি জানান, এই অস্ত্রধারীদের গ্রেফতার না করলে ভবিষ্যৎতে পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতীয় রাজনীতির অস্তিত্ব থাকবে না। তাঁরা উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ হতে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
রাইখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুইসাপ্রু মারমা, সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ কার্বারী এই প্রতিবেদককে জানান, জেএসএসের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা এই হামলার সাথে জড়িত।
কাপ্তাই উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ ছিদ্দিকী এক বিবৃতিতে এই সন্ত্রাসী ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং সন্ত্রাসী হামলার জন্য আঞ্চলিক দল জেএসএসের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের দায়ী করেন। তারা এই ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এদিকে আহতদের দেখতে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হাসপাতালে ভীড় করেন। স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং জেএসএস প্রার্থীদের স্থানীয় সমর্থকদের মধ্যে পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে দ্বন্দের জের ধরে এই সন্ত্রাসী হামলা ঘটে।