মোল্লাহাটে বোমা তৈরীকালে বিষ্ফোরণে এক যুবক গুরুতর যখম হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যখমী ওই যুবককে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। উপজেলার কোদালিয়া গ্রামে মাদ্রাসা শিক্ষক ক্বারী মোঃ জাকির মোল্লার ফাকা বিলপাড়ের বাড়িতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে ওই ঘটনা ঘটে। নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে বিভিন্ন সুত্র জানায়-ক্বারী মোঃ জাকির মোল্লার বাড়িতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর বোমা তৈরীকালে রাত ৯’টার দিকে বিকট শব্দে বিষ্ফোরণ ঘটে। ওই সময় ঘটনা স্থল থেকে একই এলাকার হাফেজ শেখের ছেলে সুরুজ (১৮) নামের এক যুবক গুরুতর যখশ হয়। পরে ওই রাতেই ক্বারী জাকির মোল্লার পরিবার ও আহত যুবকের পরিবার মিলে বাড়িতে ডাক্তার এনে যুবকের যখমী পেটে ৯’টি সেলাই দেয়া হয়। চিকিৎসার যাতীয় দায়-দায়ীত্ব/খরচ মাদ্রাসা শিক্ষক ক্বারী জাকির মোল্লা বহন করছেন।
সুত্রে আরো উল্লেখ্য, গত ২০০১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর জননেতা শেখ হেলাল উদ্দীন এমপি’কে হত্যা চেষ্টায় মোল্লাহাটের কেআর কলেজ মাঠে বিষ্ফোরিত শক্তিশালী বোমায় ৯ ব্যক্তি নিহত ও কয়েক ব্যক্তি পঙ্গুত্ব বরণ করাসহ শতাধিক লোক আহত হয়। জঘন্যতম/বর্বরোচিত ওই ঘটনার ১৯ বছর পূর্তিতে একই সেপ্টেম্বর মাসের ১৭ তারিখ রাতে বোমা তৈরী/বিষ্ফোরণ ঘটনা অবশ্যই খতিয়ে দেখা/ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।
ওই তথ্য সংগ্রহে গেলে আহত যুবক সুরুজ জানায়, সে ওই খান দিয়ে (ক্বারী জাকির মোল্লার বাড়ির সামনে) হেটে যাচ্ছিলো, তখন পাশের থেকে বোমা বিষ্ফোরণ হলে তার গায়ে লাগে। এরপর সে বেহুশ থাকায় আর কিছু জানে না বলে জানায়। পরের দিন সে দেখে তার পেটে ব্যান্ডেজ। সুরুজের মা-বাবা বাড়িতে না থাকায় তার নানী খায়রোন (৬৫) জানান, তার নাতী বোমে আহত হয়েছে, জাকির মোল্লার বাড়ির সামনে ছোট-মোটরা বোম বানাইয়া ফুটাইছে, তাই ওর গতরে গিয়ে নাগছে। এরপর বাড়ি ডাক্তার এনে পেটে ৯টি সেলাই দেয়া হইছে। কারণ উড়ে বাড়ি থেকে নেয়ারমত অবস্থা ছিলোনা। এ ছাড়া নিজেদেরকে নিরীহ দাবী করে তিনি আরো জানান, তারা কোন কেসকান্ড/ঝমেলা করবেন না। তাছাড়া জাকির মোল্লা তার চিকিৎসার সব খরচ দিচ্ছে।
ক্বারী জাকির মোল্লা বলেন-তার ছেলে ওমায়ের (১০/১২) মাদ্রাসায় পড়ে, সে প্রতি বৃহস্পতিবার ছুটিতে বাড়ি আসে, ওই দিন বাড়িতে এসে পাশের দোকান থেকে ৪টি ম্যাচ কিনে সকগুলো বারুদ এক করে বাজি ফুটায়। ওই বাজিতে সুরুজ নামে এক ছেলের পেটে সামান্য পুড়ে যায়। তিনি তার চিকিৎসা করাচ্ছেন বলেও জানান। এক প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন কোন দল করেন না, এমনকি তিনি ভোটও দিতে যান না। পরক্ষণে আবার নিজেকে আওয়ামী ঘরোনার বলে দাবী করেন। এ ছাড়া তিনি চিতলমারী উপজেলার বড়বাড়িয়া পুলিশ ক্যম্প মসজিদের ইমাম ও বড়বাড়িয়া শাহী-ঈদগাহ কওমী মাদ্রাসার শিক্ষক বলে জানান।
ক্বারী জাকির মোল্লার বড় ভাইয়ের ছেলে সেনা সদস্য পরিচয়ে রোম্মান মোল্লা নিজে উদ্যোগী হয়ে জানান-ছোটবেলা এরকম সবাই করে। তার চাচাতো ভাই ম্যাচের কাঠি দিয়ে বাজি ফুটোইছে, তাই একজনের পেটে লেগে একটু পুড়ে গেছে। এমন মামলি বিষয় নিয়ে সাংবাদিক-টিক এগুলো কি দরকার ? বিষয়টি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র বলেও উল্লেখ করেন রোম্মন মোল্লা।
মোল্লাহাট থানা কর্মকর্তা ইনচার্জ কাজী গোলাম কবীর বলেন, বিষয়টি তিনি এইমাত্র শুনলেন, এ ছাড়া ওই যখমী যুবককে এনে বিষয়টি খতিয়ে দেখাসহ তাৎক্ষণিক যথাযথ ব্যাবস্থা নিবেন বলেও জানান তিনি।