স্থল মাইন শনাক্ত করে মানুষের জীবন বাঁচানোয় কম্বোডিয়ায় সম্মানজনক স্বর্ণপদক জিতেছে একটি ইঁদুর। আফ্রিকার বিশালাকৃতির মাগওয়া ইঁদুরটিকে পুরস্কৃত করেছে ব্রিটিশ ভেটেরিনারি চ্যারিটি পিপলস ডিসপেনসারি ফর সিক অ্যানিমেলস (পিডিএসএ)। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংঘাতময় দেশ কম্বোডিয়ায় লাখ লাখ মাইন পোতা আছে বিভিন্ন এলাকায়। এর বিস্ফোরণে প্রতি বছর অনেক মানুষ প্রাণ হারায়। বিভিন্ন দেশের সহায়তায় কম্বোডিয়া সরকার এই মাইনগুলো শনাক্তের চেষ্টা করে আসছে। কিন্তু কাজটি বেশ সময়সাপেক্ষ, জটিল ও বিপজ্জনক। এই প্রেক্ষাপটে আবর্তিত হয় মাগওয়া ইঁদুর। দীর্ঘদিন ধরে মাইন শনাক্তের কাজটি এই ইঁদুরটিকে দিয়ে করানো হচ্ছে। এটি ঘ্রাণশক্তির মাধ্যমে খুব সহজে ভূমিতে পুঁতে রাখা মাইনগুলো শনাক্ত করতে পারে এবং তা মাটির ভেতর থেকে বের করে আনতে পারে কোনোরকম দুর্ঘটনা ছাড়াই। এই ইঁদুর মাত্র ৩০ মিনিটে একটি টেনিস কোর্টের সমপরিমাণ জায়গা মাইনমুক্ত করতে সক্ষম। যে কাজ একজন মানুষ মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে করলে চার দিন লেগে যেতে পারে। এতে মানুষের জীবন রক্ষা পাচ্ছে এবং সীমিত সময়ে ভূমি মাইনমুক্ত করা যাচ্ছে। ইঁদুরটিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে বেলজিয়ামের স্থল মাইন শনাক্তকারী বেসরকারি সংস্থা এপিওপিও। সংস্থাটির সদর দপ্তর তানজানিয়ায়। মাগওয়া সাধারণ পোষা ইঁদুরের চেয়ে অনেক বড়। তানজানিয়ায় জন্ম নেওয়া মাগওয়ার ওজন ১.২ কেজি। লম্বা ৭০ সেন্টিমিটার। গত সাত বছরে ইঁদুরটি ৩৯টি স্থল মাইন খুঁজে বের করেছে। এভাবে এক লাখ ৪১ হাজার স্কয়ার মিটার এলাকাকে নিরাপদ করেছে। ইঁদুরটিকে পুরস্কার দিতে পেরে দারুণ খুশি পিডিএসএ কর্তৃপক্ষ। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, 'মাগওয়া আমাদের কাছে নায়ক। এটি বহু মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে।' পিডিএসএ কর্তৃপক্ষ জানায়, ইঁদুরটিকে দারুণভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিনের প্রশিক্ষণ শেষে প্রায় সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর কম্বোডিয়ার মাইন শনাক্তকারী কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয় মাগওয়াকে।