করোনার থাবায় অনেক বই ব্যবসায়ী স্বাভাবিক জীবনযাপন থেকে ছিটকে পড়েছেন। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। বইয়ের দোকান খোলার অনুমতি পেলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খোলায় এই অবস্থা বলে জানান ব্যবসায়ীরা ।
রাজশাহীর চারঘাট-বাঘার বইয়ের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ দোকানে বেচাকেনা নেই। পুঁজি কমে যাওয়ায় অনেক দোকান বন্ধ হওয়ার উপক্রম। ধারদেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে দোকানীদের। দোকান ভাড়া ও বিদ্যুতের বিলও দিতে কষ্ট হচ্ছে।অনেক দোকানে তালা ঝুলছে।
বইয়ের দোকানের পাশে কয়েকটি মুদির দোকান খোলা থাকলেও বেচাকেনা না থাকায় অনেকে ব্যবসা পরিবর্তন করেছে। বারবার পাঠ্যক্রম পরিবর্তন হওয়ায় এ ব্যবসায় মন্দাভাব আগে থেকেই লেগে ছিল। আর এখন মোবাইল ফোনে নানারকম বই পড়ার অ্যাপস লাইব্রেরি ব্যবসায় ধাক্কা দিয়েছে।
চারঘাটের আইডিয়াল লাইব্রেরীর মালিক কাজী ইয়াসিন জানান, সারাদিনে যা বেচাকেনা হয় তা দিয়ে মাসের ঘর ভাড়া দেওয়া সম্ভব না। করোনায় স্কুল কলেজ বন্ধের পর ঘর থেকে টাকা নিয়ে এসে ভাড়া শোধ করছি। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।
বাঘা উপজেলার ব্যবসায়ী মারুফ আহমেদ বলেন, ১২ বছর ধরে বই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। বর্তমান সময়ে ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ। সমস্যাটা দুই-এক মাস হলে ব্যবসাটা ঠিকিয়ে রাখতে পারতাম। তারপরও ব্যবসায়ীরা অপেক্ষা করছেন কখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে। আবার বই কিনতে দলবেঁধে আসবেন শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকরা।
আরো দুই-তিনজন ব্যবসায়ী জানান, করোনার সময় দোকান ভাড়া কমানো আর অন্যান্য সমস্যা সমাধানে তেমন কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। দোকান মালিকরা এক মাসের দোকান ভাড়াও মওকুফ করেননি। এভাবেই চলতে থাকলে লাইব্রেরী ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি চারঘাট উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাজদার রহমান বলেন, চারঘাট-বাঘা দুই উপজেলা মিলে ৩০ জনের মতো বই ব্যবসায়ী রয়েছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তারা সবাই দুঃসময়ের মধ্যে জীবনযাপন করছেন।