সরাইলে দিনভর শুধু একটি বাড়ির সামনে উচ্ছেদ অভিযান হয়েছে। এ অভিযানে সওজের খাল দখলমুক্ত করাকালে একাধিক ফলের গাছ কাটা পড়েছে। বুধবার সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের পাশে বড্ডা পাড়া এলাকার ফয়সাল আহমেদ মৃধার স্ত্রী কানাডা প্রবাসী মেজর রোজিনা ভূঁইয়ার বাড়ির সামনের জায়গায় এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ফারজানা প্রিয়াংকা। সহকারি কমিশনারের কার্যালয় সূত্র জানায়, সরাইলে অনেকেই সরকারি খাল দখল করে ভরাট করে ফেলেছেন। অনেকে দোকানপাট ও বাড়িঘর করে বসে আছেন। ফলে দিনদিন পানি নিস্কাশনের সমস্যা প্রকট হচ্ছে। সরাইলের কুট্রাপাড়া মোড় থেকে কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধর্মতীর্থ এলাকা পর্যন্ত সড়কের দুপাশে সরকারি খাল ও সওজের জায়গার দখল করে আছেন অনেকেই। খালের উপর খুলে বসেছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সংযোগ সড়কের অনুমতি নিয়ে বাড়ির সামনের সরকারি খালটির নীচ দিয়ে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করে মাটি ফেলে সমান করেছেন বাড়ির মালিক। লাগিয়েছেন বিভিন্ন ফলজ বৃক্ষ। গাছ গুলি দ্রƒত বড় হয়ে গেছে। খাল উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযানে প্রশাসনের লোকজন গতকাল সকালে সর্ব প্রথম বেকু নিয়ে হাজির হন ফয়সাল আহমেদের বাড়ির সামনে। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ফারজানা প্রিয়াংকার উপস্থিতিতে সেখানে চলে অভিযান। বাড়ির সামনের মাটি কেটে পাশে ফেলে খাল উদ্ধারের জন্য। এতে করে ওই জায়গার অনেক গুলো ফলজ গাছও কাটা পড়ে যায়। ওই বাড়িটির সামনে অভিযান পরিচালিত হয় বিকাল ৪টা পর্যন্ত। একসময় গ্যাসের লাইনও কেটে দিতে চেয়েছিলেন। বাড়ির মালিক মেজর রোজির স্বামী ফয়সাল আহমেদ বলেন, বাড়ির মূল মালিক কানাডা প্রবাসী মেজর রোজিনা। আমি রেজিনার স্বামী। আমাকে কোন নোটিশ দেয়া হয়নি। কিছু জানানোও হয়নি। হঠাৎ করে বেকু লাগিয়ে পাশের দেওয়াল ভাঙতে শুরূ করল। সুপারি কাঁঠালসহ বিভিন্ন ফলজ গাছ গুলি কাটতে শুরূ করে। গাছ গুলি অন্যত্র সরিয়ে নিতে অনেক অনুরোধ করলাম। প্রশাসনের লোকজন কিছুই শুনেননি। সংযোগ সড়কের অনুমতি থাকার পরও মাটি ওঠিয়ে বড় করে স্তুপ দিয়েছেন। আমার আশপাশে অগণিত লোকজন সরকারি জায়গা ও খাল দখল করে মার্কেট করে বসে আছেন। অনেকে বাড়ি করে ফেলেছেন। তাদের এখানে তো যায় না প্রশাসন। এর কারণ কি? আমার প্রতি অমানবিক আচরণ করা হয়েছে। সবশেষ করে যাওয়ার সময় এসি ল্যান্ড আমাকে ১৫ দিনের মধ্যে সরকারি জায়গা থেকে সবকিছু সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে একটি পত্র দিয়ে গেছেন। এইটার কারণও বুঝলাম না। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ফারজানা প্রিয়াংকা বলেন, সরকারি খাল দখল করে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা বন্ধ করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। তাই ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে খাল দখলমুক্ত করতে এই উচ্ছেদ অভিযান। কোন দখলকারীই এই অভিযানের বাহিরে নয়। পর্যায়ক্রমে সকল সরকারি খাল দখলদারদের কবল থেকে মুক্ত করার অভিযান অব্যাহত থাকবে।