তানোরে ভাইয়ের কোটি টাকার সম্পত্তি গোপনে অল্প দামে কিনে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন বিএনপি নেতাসহ দালাল চক্র। এ ঘটনায় রেজিষ্ট্রি বন্ধের দাবি জানিয়ে তানোর সাব-রেজিষ্ট্রার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলার মুন্ডমালা বাজারে সাদিপুর মৌজায়, জে-এল নং ৬৮, ১৩৩ ও ১২৯ দাগের ২৬শতক জমি একই এলাকার জৈনক আইনাল মুন্সীর জবর দখলের ঘটনায় চলা মামলায় ২৮বছর পর আদালত সাদিপুর গ্রামের মৃত হোসেন আলী মন্ডলের পক্ষে রায় দিয়ে গত ৫বছর আগে দখল বুঝিয়ে দেন।
ওয়ারিশ সুত্রে ওই সম্পত্তির মুল মালিক মৃত হোসেন আলীর ২ ছেলে। তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অবসরপ্রাপ্ত (টিএইও) ডাক্তার জালাল উদ্দিন ও রাজশাহী কলেজের প্রানী বিদ্যা বিভাগের (অবসর প্রাপ্ত) প্রফেসর জাহিদুর রহমান। তবে, দীর্ঘদিন ধরে আদালতে চলা মামলার দেখভাল ও ব্যয় বহন করেন ছোট ছেলে ডাক্তার জালাল উদ্দিন।
২০১৫ সালে আদালত কর্তৃক আইনল মুন্সীর জবর দখল করে তৈরি করা মার্কেট ভবণ ভেঙ্গে উচ্ছেদ করে ডাক্তার জালাল উদ্দিন ও তার ভাইকে দখল বুঝিয়ে দেয়া হয়। ২০১৬ সালে ডাক্তার জালাল উদ্দিন সেখানে মার্কেট করেছেন। তবে, প্রফেসর জাহিদুল ওই সম্পত্তির বিষয়ে তেমন কোন চাহিদা ছিলোনা।
কিন্তু এলাকার কয়েকজন চিহিৃত ভুমিদস্য ও দালাল টাউট বাটপাররা বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দিয়ে প্রফেসর জাহিদুরের সম্পত্তি কিনে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। দালাল ও টাউট বাটপাররা প্রফেসর জাহিদুরকে কিছু টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে ওই সম্পত্তি অল্প দামে গোপনে কিনে নেয়ার চেষ্টা শুরু করেন। প্রফেসর জাহিদুরও কোটি টাকা মুল্যের ওই জমি অল্প মুল্যে বিক্রি করে দিতে রাজি হন।
বিষয়টি ছোট ভাই ডাক্তার জালাল উদ্দিন বিষয়টি বুঝতে পেরে বড় ভাই জাহিদুরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রফেসর জাহিদুর ডাক্তার জালাল উদ্দিনের ডাকে সাড়া না দিয়ে আত্মগোপনে থেকে কোটি টাকার সম্পত্তি অল্প মুল্যে বিক্রির করার চেষ্টা করছেন।
এনিয়ে ডাক্তার জালাল উদ্দিনের অভিযোগ, আমাদের মৃত পিতার সকল সম্পত্তির উপরে আদালতে একটি বাটোয়ারা মামলা চলছে। তিনি বলেন, মুন্ডমালা বাজারের ২৬শতক সম্পত্তি ২ ভাইয়ের।
তিনি আরো বলেন, বড় ভাইয়ের ১৩শতক জমি ফাঁকা রাখা হয়েছে, বড় ভাই সম্পত্তি বিক্রি করতে চাইলে আমিই কিনে নিবো, কিন্তু বড় ভাই আমাকে কিছু না জানিয়েই দীর্ঘদিন মামলা চালিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে উদ্ধার করা কোটি টাকার সম্পত্তি গোপনে বিক্রির চেষ্টা করছেন।
এনিয়ে ডাক্তার জালাল উদ্দিনের বড় ছেলে আহম্মেদ সিজার বলেন, আমার চাচা হঠাৎ করেই গত সপ্তাহে কোটি টাকার সম্পত্তি এলাকার বিএনপি’র নেতাদের কাছে রেজিষ্ট্র দেয়ার চেষ্টা করেন। আমরা বাধা দেয়ায় তা পারেননি। তারপর থেকে চাচার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যাচ্ছেনা।
ওই সম্পত্তি নিয়ে আদালতে বাটোয়ারার মামলা চলছে, মামলা চলা অবস্থায় ওই সম্পত্তি অন্যজনের কাছে বিক্রি করে দিরে দ্বন্দের সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, আদালতে মামলা চলা অবস্থায় কোন জমি আইনত রেজিষ্ট্রী হয়না। গোপনে রেজিষ্ট্রি নেয়ার চেষ্টা করছেন টাউটবাটপার রা।
এনিয়ে প্রফেসর জাহিদুরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়ায় য়াযনি এবং কথা বলাও সম্ভব হয়নি।
এনিয়ে তানোর সাব-রেজিষ্ট্রার মমতাজ বেগম বলেন, গত সপ্তাহে জমি রেজিষ্ট্রীর জন্য এসেছিলো, কিন্তু অভিযোগের কারণে জমি রেজিষ্ট্রী বন্ধ রেকে উভয়কে বিষয়টি সমাধাণের জন্য সময় দেয়া হয়েছে।