জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে চলতি বোরো মৌসুমে দফায় দফায় সময় বাড়ানোর পরেও পূরন হলো না বোরো ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে সরকার নির্ধারিত মূল্য ২৬ টাকা কেজি দরে ২ হাজার ৫৪ মেঃ টন ধান ও ৩৬ টাকা কেজি দরে ৩ হাজার ৬শ ৩১ মেঃ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা নিয়ে যথাসময়ে ধান ও চাল সংগ্রহ প্রক্রিয়া শুরু হয়। ৩০শে আগস্ট পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ে নির্বাচিত কৃষক ও মিলার কেউ তাদের নামে বরাদ্দকৃত ধান ও চাল দিতে পারে নাই। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সময়সীমা বাড়ানো হয় ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তাতেও নির্বাচিত কৃষক ও মিলারগণ ধান ও চাল দিতে পারে না বরং মিলার’রা দফায় দফায় আবেদন করে সময় চাইলেও চাল প্রদানে ব্যর্থ হয়। এ পযর্ন্ত চাল ১ হাজার ৪শ ৫২ মেঃ টন ও ধান মাত্র ৩২ মেঃ টন সংগ্রহ হয়েছে।
উপজেলার কুশুম শহর গ্রামের কৃষক আশরাফুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, এবার বোরো মৌসুমে আতব জাতের চিকন ধান লাগানো হয়েছিল। মোটা জাতের ধান কোন কৃষক চাষ’ই করেনি। আবার আতব ধান এবার কাঁটার সময় স্থানীয় বাজার দর ভালো থাকায় কোন কৃষক সরকারি খাদ্য গুদামের নিয়ম নীতি মেনে ধান দিতেই যায়নি।
ক্ষেতলাল চালকল মালিক সমিতির সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, আমিসহ অল্প কয়েক জন মিলার আমাদের বরাদ্দের চালটুকু দিয়েছি। সরকারি গুদামে এবার চাল দিতে কেজি প্রতি প্রায় ৭-৮ টাকা লোকসান হচ্ছে। লোকসানের ভয়ে অধিকাংশ মিলার’রা গুদামে চাল দিতে অক্ষমতা প্রকাশ করে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহেদুর রহমান বলেন, এবার বোরো মৌসুমে ধান কাঁটার সময় বর্ষা দির্ঘস্থায়ী ছিল। ভেজা ধান কৃষক মজুদ করে রাখতে পারেনি। অপরদিকে বাজার দর ভাল থাকায় কৃষকরা বাজারেই ধান বিক্রি করেছেন। খাদ্য গুদামে ধান দিতে গেলে ধানের যে শুস্কতা-আদ্রতা বা গুনগত মান নিশ্চিত করতে হয় তা নির্বাচিত কৃষকের পক্ষে সম্ভব নয়। এছাড়াও এ উপজেলায় আতব ধান ও চিকন ধান বেশি চাষ হয়। যার স্থানীয় বাজার মূল্য সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি ছিল।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নাজমুল হক বলেন, বাজারে ধানের দাম ভাল থাকায় কৃষকরা সরকারি গুদামে ধান দেয় নাই। আর যে সব মিলার’রা বরাদ্দ পেয়েও গুদামে চাল দেয় নাই তাদের বিষয়ে তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার জন্য।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম আবু সুফিয়ান বলেন, লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হলেও কৃষকরা লাভবান হয়েছে তাতেই সন্তষ্টি। তবে মিলারদের সরকারি গুদামে চাল দেওয়া বিষয় ছিল নৈতিক।