রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডমালা গীর্জায় আদিবাসি কিশোরীকে আটকে রেখে ৩ দিন ধরে ধর্ষনের ঘটনায় ধর্ষক ফাদারকে গ্রেপ্তার করা হলেও রহস্যজনক কারণে বিচারের নামে প্রহসন ও ধামা চাপা দেয়া মাতব্বরদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
ফলে, এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মি ও ধর্ষিতার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। ঘটনার পর থেকে ধর্ষকসহ ঘটনা ধামাচাপা দেয়া হোতাদের সর্বচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করা হয়েছে।
কিন্তু রহস্যজনক কারণে ধামাচাপা দেয়া মাতব্বরদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় ধর্ষিতাসহ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আপোষের নামে ঘটনা ধামা চাপা দেয়া সেই বিচারক আদিবাসী নেতা কামেল মার্ডী ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকায় আতংকের সৃষ্টি হয়েছে।
ধর্ষিতা কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর আইনের আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করা হলে কামেল মার্ডী বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে বিচারের নামে মাত্র ২হাজার টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে ধর্ষক ফাদার প্রদিপ গে-গরীকে পালানোর সুযোগ করে দেন।
পরে ফাদার পালিয়ে ধর্ম প্রদেশ রাজশাহীর গীর্জায় লুকিয়ে পরেন। ওই রাতেই র্যাব ধর্ষক ফাদার প্রদিপ গেগরীকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। কিন্তু মুল হোতা কামেল মার্ডীর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
স্থানীয়রা বলছেন, ধর্ষক ফারারের সহযোগিতার করার মুল হোতা মুন্ডুমালা সরকারী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামেল মার্ডী স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে বেশ সখতা রয়েছে। তাই তার বিচার হবে কিনা সে বিষয়ে শঙ্কা রয়েছে।
এদিকে আটকৃত ধর্ষক ফাদারের সর্বচ্চ শাস্তির দাবি যেমন উঠেছে, তেমনি ধর্ষনের পরে ফাদারকে পালানোর সুযোগ করে দেয়া ও শালিসে নামে কিশোরীর পরিবারকে সমাজ থেকে বিতারিত করার ভয় দেখানো ব্যাক্তিদের আইনের আওতাই আনার এনে বিচারের দাবি উঠেছে মিশনপাড়াসহ সর্ব মহলে।
বিশেষ করে বৃহস্পতিবার রাজশাহী সাহেব বাজার জি¦রো পয়েন্টে আদিবাসি ছাত্র পরিষদের ব্যানারে চলা মানববন্ধন থেকে ধর্ষক ফাদারকে নানা ভাবে সহযোগিতা করা তানোর উপজেলা পারগানা পরিষদের সভাপতি ও মুন্ডুমালা সরকারী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মি;কামেল মার্ডীকে আইনের আওতায় এনে বিচার করার জোরালো দাবি উঠেছে।
দ্রততম সময়ের মধ্যে তাকে আইনের আওতাই আনতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন আদিবাসি ছাত্র পরিষদের নেতারা।
আন্দোলন জোরালো করতে আদিবাসি ছাত্র পরিষদের ব্যানারে মুন্ডুমালা বাজারে কয়েক দিনের মধ্যে একটি বিশাল মানববন্ধন করার পরিকল্পনা করেছেন তারা।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন,ফাদার প্রদিপ গেগরীর কাছে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে ধর্ষণের বিষয়টি ধাপাচাপা দিতে নানা কৌশল নিয়ে ছিলেন কামেল মার্ডী। কৌশলে ধর্ষক ফাদারে মুন্ডুমালা মিসন থেকে পালানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
তবে,অভিযুক্ত কামেল মার্ডী সম্প্রতি সংবাদ কর্মীদের কাছে স্বীকার করেছেন,শুরু মাত্র কিশোরীর ভব্যিষদের কথা চিন্তা করে তিনি এমন শালিসের আয়োজন করেছিলেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মুন্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে এসআই সাইফুল ইসলাম বলেন,আটকৃত ফাদার প্রদিপ গেগরী জেলে রয়েছেন। আদালতে তার রিমান্ড চাওয়ার বিষয়টি প্রক্রিধীন রয়েছে। আর ফাদারকে সহযোগিতার করা ব্যাক্তিদের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিন্ধান্ত নিবেন।
উল্লেখ্য”তানোর উপজেলার মু-ুমালা মাহালীপাড়া এলাকার সাধুজন মেরী ভিয়ান্নী গির্জার ফাদার প্রদীপ। এলাকার আদিবাসী খ্রিস্ট্রান সম্প্রদায়ের ওই কিশোরী গত শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে বাড়ির পাশে ওই গির্জার পাশে ঘাস কাটতে গিয়ে নিখোঁজ হয়।
অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে পরদিন রোববার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার ভাই। এরপর সোমবার দুপুরের পর জানা যায়, নিখোঁজ কিশোরী গির্জার ফাদার প্রদীপের ঘরে বন্দি অবস্থায় আছে। পরে কিশোরীর পরিবারের সদস্য এবং এলাকার লোকজন ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন।
এরপর দুপুরেই গির্জার ভেতরেই শালিসি বৈঠক বসে কিশোরীর পরিবারকে ধর্মে ভয় দেখিয়ে ফাদারকে পালানোর সুযোগ করে দেন মুল হোতা আদিবাসি নেতা ও মুন্ডুমালা সরকারী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামেল মার্ডী।