সাম্প্রতিক বন্যায় আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় এক শ্রেনীর অসৎ ব্যবসায়ী, ফড়িয়া এবং মুনাফালোভী ব্যক্তি ইরি-বোরো ধান-চালের অবৈধ মজুদ করে কৃত্রিম খাদ্য সংকটের সৃষ্টি করেছে। গত ১ অক্টোবর খাদ্য মন্ত্রনালয় ধান-চালের বাজার মুল্য স্থিতিশীল রাখতে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মজুদ বিরোধী অভিযানের নির্দেশ দিয়েছে। খাদ্য মন্ত্রনালয়ের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কিছু অসাধু চাল ব্যবসায়ী ও চালকল মালিক অধিক মুনাফার জন্য ধান ও চাল মজুদ করছে। পাশাপাশি খাদ্য ব্যবসায়ী নন, এমন কিছু ব্যক্তি বসত-বাড়ী বা সুবিধাজনক স্থানে গোডাউন তৈরী করে অনুমোদিত ক্ষমতার বেশী পরিমান ধান ও চাল মজুদ করে কৃত্রিম খাদ্য সংকট সৃষ্টি করেছে। ধান-চালের বাজার মুল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে খাদ্য সংশ্লিষ্ট আইনের ধারায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য খাদ্য মন্ত্রনালয় দেশের জেলা ও উপজেলার সকল খাদ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছে। গত ১ অক্টোবর খাদ্য মন্ত্রনালয়ের অভ্যন্তরীন সংগ্রহ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব শারমিন ইয়াসমিন ওই দির্শেদ দিয়ে চিঠি ইস্যু করেছেন। পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, গত ইরি-বোরো মওসুমে পীরগঞ্জে সাড়ে ২৩ হাজার হেক্টর এবং চলতি আমন মওসুমে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এ উপজেলয়া খাদ্যে উদ্বৃত্ত থাকে। সাম্প্রতিক বন্যায় পীরগঞ্জসহ রংপুর অঞ্চলে অধিকাংশ আমনের ক্ষেত পানির নীচে তলিয়ে আছে। এ সুযোগে অনেকেই ধান-চাল মজুদ করে রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা খাদ্য বিভাগ জানায়, পীরগঞ্জ ও ভেন্ডাবাড়ী খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহের লক্ষ্যে ১’শ ৯১ টি চালকল (হাস্কিং মিল) এবং ৩ টি অটোরাইস মিলের মালিক চুক্তি করেছে। ওইসব চালকল মালিকের অনেকেই বিপুল পরিমান ধান ও চাল অবৈধভাবে মজুদ করে রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ রকম দেশব্যাপী অবৈধভাবে খাদ্য মজুদ করে রাখার তথ্য পাওয়ায় খাদ্য মন্ত্রনালয় মজুদ বিরোধী অভিযানের নির্দেশ জারি করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খাদ্য কর্মকর্তা এ প্রতিনিধিকে জানান, কৃষক তার আবাদি ধান গোলায় রাখতে পারে। কিন্তু অধিক পরিমান ধান এবং ব্যবসায়ীরা ধান-চাল মজুদ করলে সেটি ধর্তব্য অপরাধের পর্যায়ে যাবে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের সহায়তায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অবৈধ মজুদারদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। তিনি আরও বলেন, পীরগঞ্জের বেশ কয়েকটি স্থানে ধান-চালের বিপুল পরিমান মজুদ করা আছে।