অবশেষে ৭ দিনপর ঘটনাস্থল থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে মহানন্দা নদীর ভাটিতে বিএসএফ’র গুলিতে নিহত নুরুদ্দীনের গুলিবিদ্ধ অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানা পুলিশ। ৭অক্টোবর বুধবার সদর উপজেলার বালুগ্রাম তেকোনা গ্রামের নদীপাড়ে একটি লাশ ভাসতে দেখে পুলিশকে খরব দেয় স্থানীয়রা। লাশ উদ্ধারের পর সন্ধ্যায় ভোলাহাট উপজেলার নামোপাঁচটিকরী গ্রামের দুরুল হোদা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে এসে লাশটি তার নিখোঁজ সন্তান নুরু মোহাম্মদ ওরফে নুরুদ্দীনের বলে সনাক্ত করেন।
প্রত্যক্ষদশী ও স্থানীয়রা জানায়, বুধবার সকালে গোসল করার সময় মহানন্দা নদীতে একটি লাশ দেখেতে পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে শিশুরা। লাশটি অর্ধগলিত এবং গায়ে পোঁকা ধরেছে। বুকের মধ্যেখানে গুলির একটি বড় ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। বন্যার কারণে শ্রোতে পশ্চিমের উজান থেকে আমাদের এদিকে এসেছে। গতকাল সংবাদে দেখেছি ভোলাহাটে বিএসএফ’র গুলিতে নিহতরেদ লাশ মহানন্দা নদীতে ভাসছে, হয়ত সেই লাশই শ্রোতের টানে আমাদের এখানে এসেছে।
গত ১ অক্টোবর গভীর রাতে ভারতের সূখনগর সীমান্তে গরু আনতে গিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র গুলিতে নিহত হয় নুরুদ্দীন। গত ৪ অক্টোবর রোববার মহানন্দা নদীতে মাছ ধরা জাল আনতে গিয়ে ভারত সীমান্তের আর্ন্তজাতিক সীমান্ত পিলার ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের কাছে তিনটি লাশ দেখে বাংলাদেশী জেলেরা।
নিহত নুরুদ্দীনের পিতা দুরুল হোদা ও ভাই দেলোয়ার হোসেন জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে নুরুদ্দীনসহ কয়েকজন চোরাচালানী পণ্য আনতে ভোলাহাটের জেকে পোল্লাডাঙ্গা সীমান্তে দিয়ে ভারতে যায়। সেদিন গভীর রাতে মহানন্দা নদীর ওপারে ভারত সীমান্তে গুলির শব্দ শোনে এলাকাবাসী। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিল নুরুদ্দীন। খবর পেয়ে এসে দেখলাম অর্ধগলিত গুলিবিদ্ধ লাশটি নুরুদ্দীনের। তারা জানান, নিখোঁজ মিজানুর রহমান ইঞ্জিলের স্ত্রী আমাদের জানান, যে নুরুদ্দীনের বুকে গুলি লেগেছিল। এখানে এসে তার বুকে গুলি লাগার প্রমানও পেয়েছি। তাছাড়া তার গালে ছোট ছোট দাড়ি ছিল সেটিরও প্রমান মিলেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খান জানান, সদর উপজেলার বালুগ্রাম তেকোনা গ্রামের মহানন্দা নদীতে একটি লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। এরপর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য আমরা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছি। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করার সময় দেখা গেছে লাশটির বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে। একারনে আমরা এটিকে হত্যা মামলা হিসেবে নিয়েছি। তদন্তের পর আমরা বিস্তারিত জানাতে পারব।
এঘটনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে জানালে সীমান্তে হত্যার ঘটনা অস্বীকার করে বিএসএফ।
এবিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫৯ বার্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহমুদুল হাসান জানান, এ ঘটনায় নুরুদ্দীনের পরিবার এবং পুলিশের সাথে কথা বলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে প্রতিবাদ জানানো হবে।