বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক, জেলা পরিষদের সদস্য আনোয়ার হোসেন রানার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলার প্রতিবাদে নন্দীগ্রামের দামগাড়া থেকে ওমরপুর পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মানববন্ধন করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠন।
এছাড়া বিক্ষুব্ধ দলীয় নেতাকর্মীরা মামলার ষড়যন্ত্রকারী বিএনপির এমপি মোশারফ হোসেন, আওয়ামী লীগ দলীয় উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাসনাত আলীর কুশপুত্তলিকা দাহ করে।
শনিবার (১০ অক্টোবর) বেলা ১২ টা থেকে ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধনে উপজেলা আওয়ামী লীগ, পৌর আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন, সকল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, শ্রমিক সংগঠন, সুধি সমাজ ও ব্যবসায়ীসহ ২৫টি সংগঠনের প্রায় ২ হাজার নানা শ্রেণির পেশার মানুষ অংশ নেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এই মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, পৌর আ.লীগের সভাপতি আনিছুর রহমান, সাধারন সম্পাদক মুকুল হোসেন, আ.লীগ নেতা শফি উদ্দিন, মোরশেদুল বারী, মখলেছুর রহমান মিন্টু, একরাম হোসেন, কালিপদ রায়, জুলফিকার আলী, মোতাহার আলী, নিকুঞ্জু চন্দ্র, আনিছুর রহমান আলো, মিজানুর রহমান, হাফিজুর রহমান নান্টু, মোফাজ্জল হোসেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি তীর্থ সলিল রুদ্র, শ্রমিক লীগের সাধারন সম্পাদক সরফুল হক উজ্জল, স্বেচ্ছা সেবক লীগের সাধারন সম্পাদক কামরুল হাসান সবুজ, শেখ হাসিনা পরিষদের সভাপতি রেজাউল করিম, তাতী লীগের সভাপতি আবু নোমান, সাধারন সম্পাদক তারেক মাহমুদ ডিউ, পৌর শ্রমিকলীগের সভাপতি এনামুল হক, সাধারন সম্পাদক সানোয়ার হোসেন মিলন, যুবলীগ নেতা সুজন প্রামানিক, ফারুক হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা আবু নোমান নাদিম, আবু তৌহিদ রাজীব, আল-জাহিদ, সোহাগ প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানার পারিবারিক বিষয়কে কেন্দ্র করে এমপি মোশারফ হোসেন বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে, উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হাসনাতকে সাথে নিয়ে নন্দীগ্রামের শক্তিশালী আওয়ামী লীগ সংগঠন ধ্বংসের পায়তারা করছে। এক্ষেত্রে রানার বিএনপি-জামাত পন্থি ভায়রারা এমপি সঙ্গে যোগসাযোশ করে ভূমিকা রাখছে। এ ছাড়া রানার সাধারন সম্পাদক পদ নিয়ে মিথ্যা ষড়যন্ত্র করে অনেকেই সম্পাদক হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। বক্তারা দলীয় সকল নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত না হয়ে সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।
অপরদিকে দুপুর ১ টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক পক্ষ হাইব্রিড বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল বের করে। উপজেলা পরিষদের সামনে সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শামীম শেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন চন্দ্র মহন্ত, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দুলাল চন্দ্র মহন্ত প্রমুখ।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ’র সঙ্গে মোবাইলে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রফেসর ড. মো. হাসনাত আলী বলেন, চাকুরিসূত্রে আমি রাজশাহীতে বসবাস করি। আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করিনা। আমি শুনেছি এটা আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের কোন্দল। শুনেছি পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে রানার শ্বাশুড়ি তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আমি ওই পরিবারের কোন সদস্যও নই। আজকে যেটা করেছে সেটাই অবিচার করেছে। আমি এর নিন্দা জানায়।
জানতে চাইলে বগুড়া-৪ আসনের বিএনপির সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন বলেন, মামলাটি তাদের পারিবারিক বিষয়। মামলার বিষয়ে কিছুই জানিনা। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এসব করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (৫ অক্টোবর) রাতে নন্দীগ্রাম উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানার বিরুদ্ধে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ এনে বৃদ্ধ শাশুড়ি দেলওয়ারা বেগম বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় মামলা করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন মেয়ে আকিলা সরিফা সুলতানা, সরিফ বিড়ি ফ্যাক্টরির ব্যবস্থাপক ও হিসাবরক্ষক নজরুল ইসলাম, ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক হাফিজার রহমান এবং সুপারমার্কেটের ব্যবস্থাপক তৌহিদুল ইসলাম।