পাখির কিচির মিচির শব্দে মুখরিত পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার পৌর এলাকার নাজিরপাড়া গ্রাম। প্রতি বছরই বংশবিস্তারের জন্য নানা প্রজাতির দেশি পাখি অতিথি হয়ে আসে এই গ্রামটিতে। বংশবিস্তার শেষে আবার চলে যায় অজানা গন্তব্যে। গ্রামবাসীও অতিথি পাখিদের মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ থেকে রক্ষা করে প্রশাসনের সঙ্গে মিলে। বর্তমানের এই সময়টায় মা ও ছানার কিচির মিচির শব্দে মুখরিত থাকে নাজিরপাড়া গ্রাম। পাখিদের আনাগোনায় তাদের প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা সৃষ্টি হয় গ্রামবাসীর। বোদা মডেল সরকারি স্কুল এ- কলেজের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক ও নাজিরপাড়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম কিবরিয়া সেলিম জানান, শিকারির খপ্পরে পাখিদের যেন না পড়তে হয় এজন্য নিরাপত্তায় তৎপর স্থানীয় গ্রামবাসী সহ প্রশাসন। এসব দেশি পাখি প্রতি বছর বংশবিস্তারের জন্য জুন-জুলাই মাসের দিকে আসে এবং তাদের স্থায়ী জায়গায় গাছের ডালে বাসা বাঁধে, আবার বংশবিস্তার করে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে চলে যায় অন্যত্রে। প্রায় ১০ বছর ধরে পাখিদের এভাবেই গ্রামে আনাগোনা দেখা যায়। সরেজমিনে, নাজিরপাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন প্রজাতির বক, শামুকখোল, পানকৌড়ি, রাতচরা, ঘুঘুসহ দেখি পাখিতে মুখর গ্রামটি। গাছ জুড়ে কিচির মিচির শব্দ আর পাখিদের ওড়া উড়ি। প্রতিটি গাছেই অসংখ্য পাখির বাসা। তাতে মাথা উঁচু করে বসে আছে ছানারা। মা পাখিরা ব্যস্ত তাদের মুখে আহার যোগাতে।
এ ব্যাপারে পাখি ও বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী ফিরোজ আল সাবাহ বলেন, এটি একটি বড় ধরনের পাখির কলোনি। এখানে যে সব পাখি আছে তার মধ্যে ভিন্ন ধরনের পাখি হলো শামুকখোল। এর প্রজনন মৌসুম হলো জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর। এই সময় তারা উঁচু গাছের ডালে বাসা বাঁধে এবং বাচ্চা ফোটানোর পর আহারের খোঁজে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে চলে যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সোলেমান আলী বলেন, এ এলাকায় আম গাছসহ বিভিন্ন গাছে প্রায় এক থেকে দেড় হাজার দেশি পাখির আগমন ঘটেছে। এবার অতিবৃষ্টির কারণে অনেক পাখির বাচ্চা পড়ে গিয়ে আহত হয়। গ্রামবাসী তাদের সংরক্ষণ করে রাখে। এসব পাখি কেউ যেন অবৈধভাবে বিতাড়িত বা শিকার করতে না পারে সে লক্ষে গ্রামবাসীসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজর রাখা হচ্ছে। পাখিগুলো উপজেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষা করছে। এসব পাখি যেন প্রকৃতিতে আরো বাড়ে সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা প্রশাসন।