নীলফামারীর ডিমলায় গরু ছাড়া নিজেই তেলের ঘানি টানছে ৭০ বছরের বৃদ্ধ ও তার স্ত্রী। ঘানি টেনেই ৩৫ বছর ধরে জীবন জিবিকা নির্বাহ করছে তারা।
উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের সরকার পাড়া গ্রামের মৃত নছাই মামুদের ছেলে সহায় সম্বলহীন সহিমুদ্দিন(৭০) ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী ৩ ছেলে ৩ মেয়ের বাবা। ছেলেরা বিয়ে করে নিজ নিজ সংসার নিয়ে ব্যস্ত। দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ছোট মেয়ে নিলুফা আক্তার(২০) নীলফামারী জেলার জলঢাকা সরকারী ডিগ্রী কলেজে ডিগ্রী ২য় বর্ষের ছাত্রী।
বৃদ্ধ সহিমুদ্দিন জানায়, অভাব অনাটনের সংসারে ভিক্ষা বৃত্তি বেছে না নিয়ে গত ৩৫ বছর আগে অতিকষ্টে ঋণ করে একটি গরু কিনে সরিষার তেলের ঘানি চালিয়ে কোন রকমে সংসার চালিয়ে আসছিলাম। কিন্তু ১৫ বছরের মাথায় ঘানি টানা গরুটি হটাৎ করে মারা যায়। সেই থেকে গরু কেনার সামর্থ না থাকায় গত ২০ বছর ধরে প্রতিদিন ভোর ৩ টায় ৫ কেজি সরিষা ঘানিতে দিয়ে বেলা ১১টায় (৮ঘন্টা) পর্যন্ত ঘানি টানি। আমি ক্লান্ত হলে আমার স্ত্রী নুর নাহার(৫৫) হাল ধরে ঘানি টেনে তেল মাড়াই শেষ করে। মাড়াই করা তেল চাপানি বাজারে বিক্রি করে সেই লাভের সামান্য টাকা দিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাই। এবং অতিকষ্টে ছোট মেয়ে নিলুফা আক্তারের পড়ালেখার খরচ চালাই। এভাবেই বেশ কিছু অতীত অধ্যায়ের সমাপ্তি হলেও সমাপ্তি হয়নি ৭০ বছর বয়সে পা রাখা বৃদ্ধের তেলের ঘানি টানা কাজের। ঘানি টানা বৃদ্ধ সহিমুদ্দিন বলেন, আমার এই চরম দুর্দিনে সরকারী বে-সরকারী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিরা যদি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় আমি খুবই উপকৃত হব।