গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় পারিবারিক জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মিথ্যা মামলা, হয়রানী ও ষড়ষন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরাইদ গ্রামের আমেরিকা প্রবাসী মোঃ আলাউদ্দিন শিকদার তাঁর চাচাত ভাই সিদ্দিক শিকদারের অপপ্রচারে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এর আগে গত ১১ অক্টোবর সিদ্দিক শিকদার তাঁর চাচাত ভাই আলাউদ্দিন শিকদারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলণ করেন।
১৫ অক্টোবর বৃহষ্পতিবার দুপুরে তাঁর গ্রামের নিজ বাড়ি আঙ্গিনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আলাউদ্দিন শিকদার জানান, উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের আমরাইদ বাজারে তাঁর পৈত্রিক সম্পত্তিতে দোকান ঘর নির্মাণে বাঁধা প্রদান করেন তার চাচাতো ভাই সিদ্দিক শিকদার। ওই বাজারে সে তার ভাগের আড়াই কাঠা জমি বিক্রির নাম করে বিভিন্ন সময়ে আলাউদ্দিন শিকদারের কাছ থেকে ৩১ লাখ টাকা নিলেও তাকে জমি বুঝিয়ে দেয়নি। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছে। পাওনা টাকা চাইলেই তাদের অন্যান্য সম্পত্তিতে নানা অজুহাতে বাধা প্রদান করেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, থানার ওসি ও এলাকার গণমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতে টাকা দাবি এবং তা ফেরৎ দেয়ার বিষয়ে ২টি চেক প্রদান করেন। অথচ দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও পাওনা টাকা দেই দিচ্ছি বলে কালক্ষেপ করছেন।
তাদের দাদা মরহুম এয়াকুব আলী শিকদার, পিতা মফিজ উদ্দিন শিকদার এবং চাচা কফিল উদ্দিন শিকদার ও নূরুল ইসলাম শিকদারদের পৈত্রিক সম্পত্তি নিজেদের মধ্যে ভাগ-বন্টন না হওয়ায় তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এ বিরোধ চলছে। সিদ্দিক শিকদার সমহারে বন্টনের কথা বিবেচনা না করে প্রভাব খাটিয়ে তার ইচ্ছেমতো জোরপূর্বক আমরাইদ বাজারের মূল্যবান সম্পত্তি সে এবং তার ভাইদের ভোগ দখলে নিয়ে যায়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মাঝে পাল্টা-পাল্টি মামলা, সাধারণ ডায়েরী ও একাধিক মারামারির ঘটনাও ঘটেছে। বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সিদ্দিক শিকদারের ভাইপো ড. আসাদুল্লাহ শিকদার ও মোঃ ইকবাল সরকার জানান, আমরাইদ বাজারের পাশে তাদের ভোগদখলীয় ৩২ বিঘা সম্পত্তির অবৈধ দাবীদার বানিয়ে অন্যায় ভাবে জাল দলিল তৈরি করে জোরপূর্বক তাদের মামা দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ইতোমধ্যে সিদ্দিক শিকদার আদালতে তা প্রমান করতে ব্যর্থ হয়ে ভিন্ন পথ অবলম্বন করছে বলে অভিযোগ করেন।
সত্তোর বছর বয়োসি আলাউদ্দিন শিকদার বলেন, আমার চাচাতো ভাইয়ের ছেলে মাহমুদুল হক তুহিন যয়ষন্ত্রমূলক ভাবে সিদ্দিক শিকদারকে মদদ দিয়ে আমাদের ন্যয্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করছে। সে নানা কৌশলে প্রলোভন দেখিয়ে ব্যবসার কথা বলে আমার কাছ থেকে ৭-৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। টাকা ফেরত চাইলে প্রাণনাশসহ নানা ভাবে হয়রানির হুমকি দেয়। এ ছাড়া ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে দেওয়ার নাম করে স্থানীয় মহসিন খানের কাছ থেকে ৫২ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সিদ্দিক শিকদার এলাকায় ভয়ংকর সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ, মামলাবাজ হিসেবে পরিচিত। সে বিভিন্ন সময় প্রভাব খাটিয়ে পরিকল্পিত ভাবে অসৎ উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত সম্পত্তি দখলের চেষ্টা চালায়। ২১ অক্টেবর আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলনও করে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। তার সকল অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। আমি এর তিব্র নিন্দা জানাই। তিনি আরো জানান, তাঁর ন্যায্য হিস্যার সকল সম্পত্তি সেবাদান প্রতিষ্ঠানে ওয়াকফ্ করে দিতে চান। কিন্তু সিদ্দিক শিকদারদের জন্য তিনি তা করতে পারছেন না।
এ সময় প্রতিবেশী আবুল কাশেম মোল্লা, বেলায়েত হোসেন লিটন, এবিএম কাউছার আহমেদ বাবুসহ এলাকার গণমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে সিদ্দিক শিকদার ও মাহমুদুল হক তুহিনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলণে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা-বানোয়াট বলে দাবী করেন। এ ছাড়া জায়গা-জমি সংক্রান্ত বন্টন বিষয়ে তারা পাল্টা অভিযোগ করেন।