নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলার নয়ানখাল স্কুল এ্যান্ড কলেজের ইংরেজী বিষয়ের প্রভাষক সৈয়দ পাপলু মিয়ার বিরুদ্ধে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক ছাত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা ১৫ অক্টোবর রংপুর জেলার তারাগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছে। তারাগঞ্জ থানার ওসি ইসমাইল হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান মামলার একমাত্র আসামী প্রভাাষক সৈয়দ পাপলু মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের কাঁটাদুয়ার গ্রামের নিজবাড়ি হতে গ্রেফতার করা হয়। সে ওই গ্রামের সৈয়দ আব্দুর রশিদের ছেলে। ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ মতে, সে কিশোরীগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের নয়ানখাল স্কুল এ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিষয়ের প্রভাষক। তিনি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন কলেজ সংলগ্ন তারাগঞ্জ উপজেলার থানাপাড়া এলাকায়। ছাত্রীটি কিশোরীগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর পাড়ার বাসিন্দা ও কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। করোনাকালিন সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে প্রভাষক মেয়েটির বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। মেয়ের বাবা প্রভাষককে তার অভিভাবকদের নিয়ে আসতে বলেন। এ অবস্থায় প্রভাষক মেয়েটিকে প্রাইভেট পড়ার জন্য তার ভাড়া বাসায় নিয়মিত আসতে বলেন। কলেজ বন্ধ থাকায় মেয়েটি অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গিয়ে প্রাইভেট পড়তো তার কাছে। এ অবস্থায় গত ৫ মে সকাল ১১টায় মেয়েটি অন্যান্য দিনের মতো প্রাইভেট পড়তে গেলে প্রভাষকের বাসায় গিয়ে দেখে সে ছাড়া আর কোন শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়তে আসেনি। এ সময় প্রভাষক তাকে জড়িয়ে ধরে ও ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষন করে। এ অবস্থায় মেয়েটি ঘটনাটি তার অভিভাবকদের অবগত করলে প্রভাষককে তারা বিয়ে করার জন্য অনুরোধ করেন। করোনা সংকট স্বাভাবিক হলে বিয়ে করবে বলে সময় পাড় করতে থাকেন সে। এমন অবস্থায় প্রভাষক হঠাৎ করে ভাড়া বাসা ছেড়ে দিয়ে তার নিজ বাড়ি পীরগঞ্জে চলে গিয়ে মেয়েটির সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। বিষয়টি মেয়ের পরিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটিকে অবগত করলে তারা উল্টো ঘটনা মিথ্যে বলে মেয়ের পরিবারকে কোন সহযোগীতা করেনি । ১৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে মামলা করার জন্য কিশোরীগঞ্জ থানায় যায় তার বাবা। পুলিশ ঘটনা শুনে রাতে সেখানে একটি জিডি দায়ের করেন এবং ধর্ষনের ঘটনাটি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা এলাকায় হওয়ায় তারাগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করে আমাদের সেখানে পৌছে দেয়া হয়। এরপর তারাগঞ্জ থানায় মামলা দেই। মেয়ের বাবা আরো বলেন, তারাগঞ্জ থানার ওসি ওই রাতেই পুলিশ ফোর্স নিয়ে ধর্ষককে ধরতে তার গ্রামে অভিযান চালায় ও ১৫ অক্টোবর ভোরে ধর্ষককে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
তারাগঞ্জ থানার ওসি ইসমাইল হোসেন বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে প্রভাষক সৈয়দ পাপলু মিয়ার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) মামলা রুজু করা হয়েছে। ভিকটিমের ডাক্তারি পরীার জন্য আদালতের মাধ্যমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি গ্রেফতার আসামীকেও আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়।