হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূঁজা শুরু হতে আর মাত্র একদিন বাকী। ৫ দিনের দূর্গোৎসব চলাকালে মন্ডপে মন্ডপে ইতি পূর্বের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার স্থলে স্থানীয় প্রশাসন এ বছর অনেকটা ঢিলেঢালা নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করায় এবারের পূঁজা উদযাপনে নিরাপত্তার শংকা প্রকাশ করছেন বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ পার্বতীপুর উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ। তাদের অভিযোগ, অন্যান্য বছর প্রতিটি পুঁজামন্ডপে শুরু থেকে বিসর্জনের দিন পর্যন্ত পুলিশের পাশাপাশি আনছার-ভিডিপি ও গ্রাম পুলিশের স্থায়ী নিরাপত্তা দল নিয়োগ করা হতো। কিন্তু সে জায়গায় এবারে গোটা উপজেলায় সবকটি পূঁজামন্ডপের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছে পুলিশের ২টি মোবাইল টিম, প্রতি ইউনিয়নে ও এক পৌরসভায় পুলিশের ১ উপ-পরিদর্শক ও ১ সহকারি উপ-পরিদর্শকের সমন্বয়ে গঠিত পৃথক ভ্রাম্যমান টহলদল ও আনছার-ভিডিপি সদস্যের ১৪টি মোবাইল টিম। এছাড়াও প্রতিটি পুঁজামন্ডপে ১০ থেকে ২০ সদস্যের স্থানীয়ভাবে গঠন করা স্বেচ্ছাসেবক দল নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।
এ বছর উপজেলার ১০ ইউনিয়ন, এক পৌরসভায় ১৪২টি মন্ডপে হিন্দু ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূঁজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে পার্বতীপুর পৌরসভায় ৭টি ও ১০ ইউনিয়নে ১৩৫ মন্ডপে শারদীয় দূর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ৩০টি মন্ডপে আগামী চৈত্র মাসে বাসন্তি দূর্গোৎসবের আয়োজনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ পার্বতীপুর উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক দিপেশ রায় জানান, এবার উপজেলায় ১৪২টি মন্ডপে শারদীয় দূর্গাপূঁজার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বেলাইচন্ডি ইউনিয়নে ২৪, মন্মথপুর ইউনিয়নে ২৭, রামপুর ইউনিয়নে ১৫, পলাশবাড়ী ইউনিয়নে ১০, চন্ডিপুর ইউনিয়নে ১০, মোমিনপুর ইউনিয়নে ১২, মোস্তফাপুর ইউনিয়নে ৭, হাবড়া ইউনিয়নে ১১, হামিদপুর ইউনয়নে ৫, হরিরামপুর ইউনিয়নে ১৩ টি ও পার্বতীপুর পৌরসভায় ৭টি মন্ডপে দূর্গাপুজা অনুষ্ঠানের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তিনি জানান, আগামী ২২ অক্টোবর ষষ্ঠি পূঁজার মধ্যদিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্ম্মালম্বীদের এবারের প্রধান ধর্মীয় শারদীয় দুর্গোৎসব। ২৩ অক্টোবর সপ্তমী, ২৪ অক্টোবর অষ্টমী, ২৫ অক্টোবর নবমী, ২৬ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে ৫ দিনের উৎসব।
দূর্গাপুজা শান্তিপূর্ণভাবে ও উৎসব মূখর পরিবেশে সম্পন্ন করার জন্য পুজা মন্ডপগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছে ৬ আনসার-ভিডিপি সদস্যের ১৪টি মোবাইল টিম। দূর্গোৎসব চলাকালে ৮৪ আনসার-ভিডিপি সদস্য উপজেলার ১০ ইউনিয়ন এক পৌরসভায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন বলে পার্বতীপুর উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা মোঃ মোমিন উদ্দীন জানান।
বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ পার্বতীপুর উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি কৈলাস প্রসাদ সোনার বলেন, এ দূর্গোৎসবকে ঘিরে নানা আয়োজনে ব্যস্ত নর-নারী, তরুন-তরুণী এমনকি বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও। দেবীর আর্শিবাদ পাওয়ার আশায় তারা এখন দেবীর আগমনে প্রতিক্ষার প্রহর গুনছেন।
পার্বতীপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মোখলেছুর রহমান বলেন, পূঁজা শুরুর আগেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুজা মন্ডপে ১৪টি মোবাইল টিমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সাথে প্রতিটি পুজা মন্ডপে থাকছে ১০ সদস্যের স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দল।
পার্বতীপুরে এবারের দূর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে পালিত ও জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলের মিলন মেলায় পরিনত হবে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহনাজ মিথুন মুন্নী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।