জয়পুরহাটের পাঁচবিবি সীমান্তে মাদক সেবনের অভিযোগে কড়িয়া বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার নুর আলমের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের বেধড়ক পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ঐ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মাজেদা বেগম (৭৫) গুরুত্বর আহত হয়ে জয়পুরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাত ৮টায় ভারত সীমান্ত ঘেষা পশ্চিম কড়িয়া গ্রামে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের অভিযোগে জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফার নাতী হাফিজুল (৩৫) ও তার সঙ্গে থাকা মেহমান জামিলরুল (২৫) প্রতিদিনের মত রাতের খাবার খেয়ে ঘরে ঘুমানোর সময় নওগাঁ জেলার পতœীতলা ১৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন কড়িয়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার নুর আলমসহ ৫/৬ সদস্যের একটি টহল দল অতর্কিতভাবে হাফিজুলের ঘরে প্রবেশ করে এবং বলে মাদক আছে বের করে দে। সে মাদক নেই বললে বিজিবি সদস্য তাদের বেধড়ক পিটাতে থাকে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মাজেদা বেগম এগিয়ে গেলে তাকেও দরজা বন্ধ করে এলোপাথ্যারী লাঠি দিয়ে পিটাতে থাকে। ঘটনাটি এলাকাবসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে মহুর্তের মধ্যে লোকজন এসে ঐ বিজিবি সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও কড়িয়া বাজারের নেতৃত্বস্থানীয় লোকজন এসে বিজিবি সদস্যদের জিম্মায় নেন। খবর পেয়ে পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনসুর রহমান তৎক্ষনাত ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি ১১ বছর ইপিআরে চাকুরী করেছি। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। আমার পরিবারের কেউ মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত নয়। বিজিবি সদস্যরা অন্যায়ভাবে আমার নাতী ও স্ত্রীকে মারপিট করেছে। আমি এর বিচার চাই। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার মিছির উদ্দিন বলেন, বিষয়টি জেলা কমান্ডার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরমান হোসেন বলেন, অভিযোগ পেলে, আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পতœীতালা ১৪ ব্যাটালিয়নের সিও লেঃ কঃ নাদিম বলেন, ৪জন মাদকসেবী মাদক সেবন করছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবি সদস্যরা ঐ বাড়ীতে যায়। বিজিবি সদস্যের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদকসেবীরা পালানোর চেষ্টা করলে বিজিবির সঙ্গে মাদকসেবীদের ধস্তাধস্তির সময় অনিচ্ছাকৃত ভাবে ঐ মহিলার পায়ে লাঠির আঘাত লাগে। পরে বিজিবির পক্ষ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা সহ তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ওই ঘটনায় বিভাগীয় তদন্তের স্বাপেক্ষে দোষী বিজিবি সদস্যের বিরুদ্ধে প্রমান পাওয়া গেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।