বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেলা ১১ টার আগে কোনো চিকিৎসক আসেন না। রোগীরা সেখানে চিকিৎসা সেবা নিতে গেলে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হন। এসব অভিযোগ করেছেন সেখানে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা সাধারণ রোগীরা।
বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়েও অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিতে এসেছিলেন ডায়াবেটিকে আক্রান্ত রোগী আঞ্জুয়ারা বেগম। তিনি সাজাপুর প-িতপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
তিনি বলেন, আমি সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে হাসপাতালে এসেছি। কিন্তু বেলা ১১ টা পর্যন্তও চিকিৎসকের দেখা পাইনি। আমার বাড়িতে অনেক কাজ ছিল। আমার পক্ষে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা আর সম্ভব হচ্ছিল না; এ কারণে বাড়িতে চলে এসেছি।
আঞ্জুয়ারা বলেন, ‘সেখানে আমি ছাড়াও আরও ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী দাঁড়িয়ে ছিলেন চিকিৎসকের অপেক্ষায়।’
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে এলেই বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে এক্স-রে, ইসিজি, আলট্রাসোনোগ্রাম, রক্ত ও প্রস্রাবের বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেই সাথে রোগীরা সরকারি ওষুধ পান না বলেও অভিযোগ। ফলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে রোগীরা অর্থদণ্ড ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
উপজেলার সাজাপুর পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা জুয়েল রানা। তিনি অভিযোগ করেন, শাজাহানপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আমরা ভালো সেবা পাচ্ছি না। সেখানকার চিকিৎসকরা রোগীদের সঙ্গে বাজে আচরণ করেন। আবার রোগি বেশি দেখলেই তাদেরকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে বলে হাসপাতাল কতৃপক্ষ।
জুয়েল রানা বলেন, মাস গেলে শুধু বেতন তুলছেন এসব চিকিৎসক। তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন না।
বৃহস্পতিবার সেবা নিতে আসা অন্তত ১৫ জন রোগী অভিযোগ করেন, খোঁজ নিলে দেখা যাবে এই হাসপাতালের অধিকাংশ চিকিৎসকের ব্যক্তিগত ক্লিনিক আছে। তারা সেখানে ভালোভাবে চিকিৎসা দেন। অথচ সরকারি হাসপাতালে তাদের কোনো পাত্তা নেই।
অনেকে অভিযোগ করেন, সরকারি স্বাস্থ্য সেবার অপ্রতুল ও অব্যবস্থার সুযোগ নিচ্ছে বেসরকারি ক্লিনিক এবং ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের মালিকরা৷ কিছু চিকিসকের কারণে সরকরি স্বাস্থ্যসেবার উপর জনগণের আস্থা কমে যাচ্ছে।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোতারব হোসেন বলেন, ‘আমি ঢাকাতে আছি। জেলা সিভিল সার্জন স্যার আজকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন। সিভিল সার্জন স্যারকে নিয়ে সবাই ব্যস্ত থাকায় বেলা ১১ টা পর্যন্ত হয়ত কোনো চিকিৎসক রোগী দেখতে পারেননি, এটাই হতে পারে।’