বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এ সম্পর্ক শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে পূর্বের চেয়েও এখন আরও অটুট হয়েছে। এটা আরও বেগবান হবে। সীমান্ত হত্যা বন্ধ, তিস্তার পানিসহ সকল সমস্যার বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সমাধান হবে। দু’দেশের সম্প্রীতি কেউ যেন নষ্ট না করতে পারে সেজন্য তিনি সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
নোয়াখালীতে বিবস্ত্র নারী ও ক্রমবর্ধমান হারে নারী নির্যাতন ও ধর্ষনের ঘটনা ঘটায় দু:খ ও লজ্জা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ধর্ষক যেই হোক, তার কোন দলীয় পরিচয় থাকতে পারে না। ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনকারীরা দুর্বৃত্ত। এদেরকে সামাজিক ভাবে প্রতিরোধ প্রতিহত করতে হবে। ধর্ষক আমার দলের যে কোন পর্যায়েরই হোক না কেন এ ব্যাপারে কোন ছাড় নেই। প্রশাসন যেন এ বিষয়ে কোন ঘটনা ঘটা মাত্রই তড়িৎকর্মা ভূমিকা পালন করে।
আপনারা জানেন, প্রধানমন্ত্রী যেকোন অপরাধের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে কোন অপরাধীই যেন কোন ছাড় না পায়।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, মাদক, ইভটেজার, ধর্ষক, নারী নির্যাতনকারীসহ যে কোন অপরাধের বিরুদ্ধে তুমুল সামাজিক প্রতিরোধ ও আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এসব দুর্বৃত্ত ও দুর্বৃত্তায়নকে অংকুরে বিনষ্ট করে দিতে হবে।
তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে কঠোর ভাষায় বলেন, আমার দলের যে কোন পর্যায়ের কেউ কোন ঘৃণ্য অপরাধ ও দুর্বৃত্তায়নে লিপ্ত থাকলে তাদেরকে শুধু দল থেকে বহিষ্কার নয়, আজীবন আওয়ামী লীগের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে তাদের জন্য।
ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ও সামাজিক অবক্ষয় রোধে গণমাধ্যম কর্মীরা সঠিক দায়িত্ব পালন করায় তিনি নোয়াখালীর সকল সাংবাদিককে ধন্যবাদ জানান।
তিনি রোববার সকালে শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষে ঢাকা তার বাসভবন থেকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট বাজারে কেন্দ্রীয় পূজামন্ডপ শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দিরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শারদীয় শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় এসব কথাগুলো বলেন।
তিনি আরো বলেন, বৈশ্বিক করোনা মহামারী ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন আমি নিজ নির্বাচনী এলাকায় আসতে পারিনি। শারীরিক ভাবে ভিষণ অসুস্থ থাকার পরও দলীয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে আবারও ২য় মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব আমার ওপর দিয়েছেন। এজন্য আমি দলীয় নেত্রী এবং আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। কারণ এ কৃতিত্ব আমার নয়, এ কৃতিত্ব আমার নির্বাচনী এলাকার গণমানুষের। তারা আমাকে নির্বাচিত করায় তাদের ভালোবাসা ও দোয়ার কারণে আমি এ সম্মানে সম্মানিত হয়েছি।
আপনারা আমাকে সম্মান দেখিয়েছেন ভোট দিয়ে। আমিও নোয়াখালীর উন্নয়নে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আপনাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে নোয়াখালী জেলার অসম্পূর্ণ উন্নয়ন কাজগুলো শেষ করতে পারবো।
করোনা পরিস্থিতিতে সীমিত ভাবে দূর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সারাদেশে ১৫ হাজার পুজামন্ডপে পুজা চলছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ আমাদের বাংলাদেশ। আমরা বিভিন্ন ধর্মের অনুসারী হলেও, আমরা সকলে সকলের তরে, সহমর্মিতায় ও সহানুভূতিশীল হয়ে দেশ গড়ার কাজে এগিয়ে যাচ্ছি। তিনি সামাজিক বিভিন্ন মাধ্যমে মিথ্যাচার, গুজব, উস্কানিমূলক লেখা- লেখি না করার আহ্বান জানান। প্রত্যেকে প্রত্যেক ধর্মের প্রতি সহনশীল থাকলে কোথাও অপ্রীতিকর কোন কিছু ঘটার সম্ভাবনা নেই। অতীতের মত এবারও কোম্পানীগঞ্জের সকল পুজা মন্ডপ ও মন্দিরের জন্য সাহায্য সহযোগিতা দেয়া হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন,কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউল হক মীর, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেল, উপজেলা আ.লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মিলন কান্তি মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক কমলকান্তি মজুমদার, শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাবু নির্মল দে, সাধারণ সম্পাদক দিপক সূত্র ধর প্রমূখ।