মাত্র এক সপ্তাহ পূর্বে পটিয়া থেকে উদ্ধার হওয়া লাশটি ভৈরবের পরকীয়া প্রেমিক নবী হোসেনের। মায়ের সঙ্গে পরকীয়া করে বিয়ে করায় ক্ষুদ্ধ ছেলেই তার চাচা নবী হোসেনকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যা করে। এরপর ঘটনা ধামাচাপা দিতে লাশটি সেখানে ফেলে রেখে গিয়েছিল। রোববার দুপুরে ওই লাশ উদ্ধারের ঘটনায় এমন তথ্য দিয়েছে চট্টগ্রামে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই। এরআগে গত শুক্রবার রাতে নরসিংদী ও কিশোরগঞ্জ এলাকা থেকে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা হলেন আশিক মিয়া (২১) ও সুমন মিয়া (২৩)। গ্রেপ্তারের পর আদালতে রিমান্ডের আবেদন করলে আসামিদের তিন দিনের রিমান্ডও মঞ্জুর করেছেন বলে জানিয়েছে পিবিআই। উপর্যুক্ত ঘটনায় চট্টগ্রাম শহরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পিবিআই জানায়, গত ১৭ অক্টোবর ওই লাশটি উদ্ধারের পর পিবিআই আঙুলের ছাপ মিলিয়ে প্রথমে ওই যুবকের পরিচয় শনাক্ত করে। নবী হোসেন নামের ওই ব্যক্তির বাড়ি ভৈরবের আগানগর ইউনিয়নের পুরানচর এলাকায়। লাশ উদ্ধারের পর নবীর ভাই চট্টগ্রামে এসে লাশ শনাক্ত করে এবং পটিয়া থানায় ৫জনকে আসামি করে একটি মামলা করে। পিবিআই স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলার তদন্তভার নিয়ে নরসিংদী থেকে আশিককে ও কিশোরগঞ্জ থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করে। একই সাথে হত্যাকা-ে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কারও উদ্ধার করে। সূত্র জানায়, এই হত্যাকা-ের হোতা সাব্বির নামে এক যুবক। সে সম্পর্কে নিহত নবী হোসেনের ভাতিজা। তার বাড়িও ভৈরবে। ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে সাব্বির ভাড়াটে খুনি দিয়ে তার দুঃসম্পর্কের চাচা নবী হোসেনকে খুন করায়। সাব্বিরের বাবা একজন প্রবাসী।
পিবিআই আরো জানায়, সে সুযোগে নবী হোসেন তার মায়ের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তারা পালিয়ে বিয়েও করে। ছেলে সাব্বির বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। এতে নবী হোসেনকে খুনের পরিকল্পনা করে সে। এজন্য তুষার নামে একজনের সাথে ৬০ হাজার টাকায় খুনের চুক্তি করে। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৫ অক্টোবর মাইক্রোবাসে করে ভৈরব থেকে নবী হোসেনকে অপহরণের চেষ্টা করে পিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার ও পলাতক আসামিরা। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হয়। প্রথম দিন ব্যর্থ হওয়ায় তারা পরদিন মাইক্রোবাসের পরিবর্তে প্রাইভেটকার নিয়ে নবী হোসেনকে অপহরণ করে। অপহরণের পর নবী হোসেনকে চট্টগ্রামে আনার পথে মুখে গামছা বেঁধে গলা টিপে হত্যা করে। এ সময় তার পায়ের রগও কেটে দেওয়া হয়। পরে নবী হোসেনের লাশটি প্রাইভেটকারে নিয়ে কক্সবাজারের দিকে রওনা দেয়। পটিয়ায় মহাসড়কে লাশটি ফেলে দিয়ে খুনিরা কক্সবাজার ভ্রমণ করে পুনরায় ভৈরবে ফিরে যায়। এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্যের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।