মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আল মামুন মেম্বার কর্তৃক মধ্যযুগীয় কায়দায় এক স্কুল ছাত্রীকে নির্যাতন একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এদিকে এ ঘটনায় নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় উঠলে সোমবার দুপুরে ইউপি সদস্য আল মামুন মেম্বার ও তার শশুর মিলন সরকারকে আটক করেছে গজারিয়া থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মোমেন(পিপিএম)। তিনি জানান ওই স্কুল ছাত্রের বাবা আলম বেপারীর দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার বিবরণীতে জানা যায়, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের চর বাউশিয়া ফরাজীকান্দি গ্রামে শনিবার রাতের আঁধারে প্রেমিকার সাথে লুকিয়ে দেখা করতে গিয়ে ইউপি সদস্য কর্তৃক বেধড়ক মারধরের শিকার হয়েছে প্রেমিক তামিম হোসেন(১৭)। এদিকে গতকাল রাতে মারধরের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে, বাধ্য হয়ে গাঁ ঢাকা দিয়েছে ওই ইউপি সদস্য।
আহত তামিম উপজেলার চরবাউশিয়া বড় কান্দি গ্রামের আলম বেপারীর ছেলে এবং স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
আহত ওই স্কুল ছাত্র এবং তার স্বজনরা জানান,বাউশিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য আল মামুনের মেম্বারের শ্যালিকার সাথে স্কুলছাত্র তামিমের প্রায় দুই বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত ২৪ অক্টোবর স্কুলছাত্র তামিমকে ফোনে একাধিকবার এসএমএস ও কল করে বাড়িতে আসতে বলে আল মামুন মেম্বারের শ্যালিকা। এদিকে প্রেমিকার ডাকে সাড়া দিয়ে রাত দশটার দিকে ওই স্কুলছাত্র আল মামুন মেম্বারের বাড়িতে তার প্রেমিকার সাথে দেখা করতে গেলে স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে যায়। এ সময় আল মামুন মেম্বার ও তার স্ত্রীসহ ৪/৫জন ওই স্কুলছাত্রকে ছাদে নিয়ে আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করে। মারধরে সে অজ্ঞান হয়ে গেলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার দিয়ে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠিয়ে দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: জিয়াউর রহমান।
আল মামুন মেম্বারের দাবি, তামিম ডাকাতির উদ্দেশ্যে তার বাড়িতে প্রবেশ করে তার শালীর শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। এজন্য তারা যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে গজারিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এদিকে বিষয়টি অস্বীকার করে প্রেমিক তামিম জানান, মামুন মেম্বারের স্ত্রীর ও আমার মোবাইলের কল লিস্ট এবং এসএমএস চেক করলে বিষয়টা আপনাদের পরিষ্কার হবে। ডাকাতির উদ্দেশ্যে নয় প্রেমিকার সাথে দেখা করতে গিয়েছিল সে।
এদিকে রোববার রাতে মারধরের ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভিডিওতে দেখা যায় মামুন মেম্বার ও তার স্ত্রী মিলে ইট দিয়ে ওই স্কুলছাত্রের পায়ের হাড় গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। অমানবিক এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ।