আমার গ্রাম আমার শহর প্রধানমন্ত্রীর এ শ্লোগা কে সামনে রেখে রাজনীতি নেতা, ক্ষমতাধর ব্যক্তি, সম্পদশালী, দরিদ্র যেই হোক আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সরকারী রাস্তার উপর গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করায় পাল্টে গেছে ভোলাহাট উপজেলার চিত্র। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউর রহমান। দিনাজপুরের পাঠগ্রাম থেকে বদলী হয়ে ভোলাহাট উপজেলায় যোগদান করেন সম্প্রতিকালে। যোগদানের পর তিনি লক্ষ্য করেন সরকারী রাস্তা দখল করে যাতাযাতে মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন। ভোগান্তি দূর করতে সরকারীনীতি বাস্তবায়নে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে মাঠে নামেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউর রহমান। মোবাইল কোর্টের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের দায়িত্বে থেকে চালাতে থাকেন রাস্তার পাশে থাকা অবৈধ স্থাপনার উচ্ছেদ অভিযান। মশিউর রহমান সকালে ঘুম থেকে উঠে এক এক দিন এক এক এলাকায় প্রায় ২০/৩০ কিলোমিটার হেঁটে দৌড়ে দেখে বেড়ান ব্যাপক জনগোষ্ঠির সমস্যা। যেখানেই সমস্যা সেখানেই ব্যবস্থা গ্রহণ। দীর্ঘ সময় ধরে চলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে ৯০ শতাংশ মানুষের মাঝে সুস্থির নিঃশ^াস ফিরেছে। প্রস্থ্য রাস্তায় নির্বিঘনে চলাচল করতে পারছেন এলাকাবাসি। উচ্ছেদ অভিযানে সহযোগিতায় রয়েছেন জনপ্রতিনিধি, কর্মকর্তা, স্থানীয় সাংবাদিক ও এলাকার সাধারণ মানুষ। অবিরাম ছুটে চলা সুন্দর ভোলাহাট গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সম্প্রতি সফল হয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। উপজেলার সব চেয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ জায়গা মেডিকেলমোড় দখলদারদের দখলদারিত্বে রাস্তা সংকুচিত হওয়ায় পথচারি ও যানবাহন চালকদের সাথে দূর্ঘটনা জনিত কারণে দ্বন্দের সৃষ্টি এমনকি রাস্তা পারাপারে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হতো। তিনি প্রথম এ স্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন। উচ্ছেদ অভিযানে রাস্তাটি এখন ব্যাপক প্রস্থ্য হওয়ায় আর কোন ভোগান্তি নেই। বুঝায় যায়না এ মোড়ে ভোগান্তিতে পড়তেন এলাকার মানুষ। এ ছাড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের ভোলাহাট-রহনপুর মূল সড়কের পারেপাশ প্রস্থ্য ও জনস্বার্থে বিভিন্ন রাস্তার উপর হেলে পড়া গাছের ডালপালা ছাঁটায় করা হয়। উপজেলার মুশরীভূজা বাজার, বড়গাছী বাজার, গোহালবাড়ী কাউন্সিল বাজার, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, উপজেলা দক্ষিণ গেট, ইমামনগর বাজার, ফুটানী বাজার, কালিতলা বাজার, ময়ামারী, সুরানপুর,তীলোকী, বীরশ^রপুর ৮ কিঃমিঃ ক্যানেলসহ বিভিন্ন স্থানের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখনও উচ্ছেদ অভিযান অব্যহত রয়েছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুরোধে থরে থরে রাস্তার পাশে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে বাহারি ফুলের গাছ সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে রাস্তার পাশে অবৈধ স্থাপনা তৈরী করে যে সব দরিদ্র মানুষ বসবাস করছিলেন। যাদের অন্যত্রে বাড়ী করার নিজস্ব কোন জায়গা নেই তাদের সরকারী জায়গায় বাড়ী করে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। মেডিকেল মোড় বাজার কমিটির সভাপতি আফরাজুল হক বাবু জানান, উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করায় ভোলাহাট উপজেলার চিত্র পাল্টে গেছে। তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ধন্যবাদ জানান। গোহালবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান ও ভোলাহাট ইউপি চেয়ারম্যান যথাক্রমে আবদুল কাদের ও আলহাজ¦ ইয়াজদানী জর্জ বলেন, ভোলাহাট উপজেলা একটি মডেল উপজেলায় পরিণত হয়েছে। এখন গরু-ছাগলসহ রাস্তার উপর কোন উপদ্রব নেই। প্রস্থ্য র্নিভেজাল রাস্তায় উপজেলার মানুষ অবাধে কোন বাধা ছাড়াই বিভিন্ন জায়গাতে চলাচল করতে পারছেন। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গরিবুল্লাহ দবির জানান, বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাস্তার পাশে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ভোলাহাট ৫০ বছর এগিয়ে গেলো। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মোবাইল কোর্টের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মশিউর রহমান বলেন, সরকার তাকে সরকারী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে উপজেলায় প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন। সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে জনস্বার্থে আইনের প্রয়োগের মাধ্যমে অবৈধ্য স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, ভোলাহাটকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন একটি মডেল উপজেলা হিসাবে দেশের দরবারে উপস্থাপন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। ফলে নিজ উপজেলাকে সুন্দর সাজানো গোছানো রাখতে ভোলাহাটবাসিকে অনুরোধ করেন। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অব্যহত থাকবে বলে নিশ্চিত করেন। তিনি ভোলাহাটের বিশাল বড় বিলভাতিয়ার উন্নয়নে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান।