ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের একের পর এক মানবিক উদ্যোগে জনমনে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। জেলায় এমন কোনো জনপদ নেই যেখানে তার মানবিকতার স্পর্শ পড়েনি। তাঁর এমন সব শুভ ও কল্যাণকর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।
জেলা প্রশাসক অতুল সরকার ফরিদপুরের যোগদানের পর থেকে নিয়মিত ভাবে জেলার সমস্যা গ্রস্থ ও অসহায় মানুষের কথা শোনার জন্য গণশুনানীর আয়োজন করেন। সেখানে সাধারন মানুষ তাদের সমস্যার কথা সরাসরি বলতে পারেন জেলার এই শীর্ষ কর্মকর্তার কাছে। আর সেখার থেকে তাদের সমাধান পেয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফিরছেন অনেকেই।
এমন একটি ঘটনা উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়, ফরিদপুরের সদর উপজেলার ঈশানগোপালপুর ইউনিয়নের ডিগ্রিচর বারখাদা গ্রামের দশম শ্রেণীর ছাত্রী চাদঁনী আক্তার। গত কয়েক মাস ধরে তার পরিবার স্কুলের বেতন ও প্রাইভেট পড়ানোর বেতন দিতে পারছিলেন না।
রেজলা প্রশাসকের মানবি সহায়তার কথা লোক মুখে শুনে চাঁদনী আক্তার হাজির হন জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের কাছে। জেলা প্রশাসক ধৈর্য ধরে তার কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে তাকে নগদ অর্থ সাহায্য ছাড়াও তার পড়াশুনার খরচ বহন করার কথা জানান।
আরেকটি ঘটনা এমন, জেলার সদরপুর উপজেলার পেয়াজখালী এলাকার বাবা হারা দুই ভাইবোন মিতু (৬) ও নাহিদ (৪) তার মা পলাশীকে নিয়ে এসে হাজির হন জেলা প্রশাসকের কাছে সাহায্যর জন্য। জেলা প্রশাসক তাদের কষ্টের কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে স্কুলে ভর্তি করার ব্যবস্থা করেন। পরে তাদের নতুন জামা কাপড় কিনে পড়িয়ে দেন।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রতি বুধবার সকাল ১০টার দিকে প্রকাশ্যে গণশুনানিতে অংশ নেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার।
এসময় সাক্ষাত প্রার্থী তাদের বিভিন্ন সমস্যা জেলা প্রশাসককে জানান। জেলা প্রশাসক প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে সমস্যা-অভিযোগসহ বিভিন্ন বিষয় জেনে তাৎক্ষনিকভাবে সেসব সমস্যা সমাধান করেন, অনেক সময় উপস্থিত সাক্ষাত প্রার্থীদের সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তকর্তাদের কাছে পাঠিয়ে তার সমস্যার সমাধান করেন।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রোকসানা রহমান জানান, গতানুগতিকতা পরিহার করে জেলা প্রশাসক প্রকাশ্যে গণশুনানি করার সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুযায়ী নিজ কার্যালয়ের দোতলায় খোলা জায়গায় প্রতি বুধবার গনশুনানি হয়।
এভাবেই প্রতি নিয়ত জনসেবায় মগ্ন থেকে আস্থা ও ভরসার প্রতীক হয়ে উঠছেন তিনি। ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা অর্জন করে জেলা প্রশাসক অতুল সরকার হয়ে উঠছেন মানবিক জেলা প্রশাসক। সততা ও নিষ্ঠাবান প্রশাসক হিসেবে মানুষের ভালবাসার জায়গায় স্থান করে নিয়েছেন তিনি।
তার এই কর্মকতান্ড প্রসঙ্গে ফরিদপুর সনাক এর সভাপতি অ্যাড. শিপ্রাগোস্বামী বলেন, প্রশাসন যখন জনবান্ধব হয় হয়, তখন সাধারন মানুষ সেবা পেয়ে থাকে। জেলা প্রশাসকের এই উদ্যোগ অবশ্যই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।
ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী এ প্রসঙ্গে বলেন, বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার চেষ্টা করছে মানুষের দৌড় গোড়ায় সরকারি সেবা পৌছে দিতে। আর সেই লক্ষ্যেই জেলা প্রশাসকের এই উদ্যোগ।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, “সুশাসনে গড়ি, সোনার বাংলা” এই স্লোগানকে সামনে রেখেই আমরা কাজ করছি। চেষ্টা করছি সাধারন মাসুষের কথা শুনে তাদের সেবা দিতে, তবে আপনাদের সকলের সহযোগিতা দরকার।