রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে চত্রা নদীর অপরিকল্পিত ভাবে খনন করার কারণে পানি হ্রাসের সাথে সাথে দু,টি গুরুত্বপুর্ণ পাকা সড়কের প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকায় ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে এলাকার প্রায় ৫শতাধিক পরিবারের মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। পায়ে হেটে ছাড়া চলাচল করতে পারছে না, ফলে যানবাহন চলাচল সম্পুর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকেই বাড়ী-ঘর সরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে। ঝুকিতে রয়েছে অনেক বসতঘর।
জানাগেছে, বাংলাদেশ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়নে গড়াই নদী-সিরাজপুর হাওড়ের উৎপত্তিস্থলের চত্রা নদী ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের রাজবাড়ী পওর বিভাগাধীন রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৬৪ জেলার অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুণঃখনন (১ম পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় চত্রা নদীর ১৬০০০ কিমি. ২৩০০০ কি.মি.= ৭০০০ কি.মি পুণঃখনন কাজের প্যাকেজ নং-পি-৬/রাজবাড়ী। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ১৫৪ মতিঝিল বা/এর নূনা ট্রেডার্স ৭.৯৮ কোটি টাকা ব্যায়ে ২২.০০ থেকে ২৩০০০=৭০০০ কি.মি খাল পুনঃখনন কাজ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিন উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের খাটিয়াগাড়া, চরঘিকমলা, বাকসাডাঙ্গী, বিলটাকাপোড়া, ঘিকমলা, মরাবিলা এলাকায় গিয়ে দেখাযায়, নারুয়া বাজার থেকে লাঙ্গলবাঁধ ঘাট সড়কের ও বালিয়াকান্দি-পাংশা সড়কের বাকসাডাঙ্গী, চরঘিকমলা, বিলটাকাপোড়া, খাটিয়াগাড়া এলাকায় ২টি সড়ক নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। খাটিয়াগাড়া ও চরঘিকমলা চত্রা নদীর ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রীজের দু,পাশেও ভেঙ্গে গেছে। ব্রীজটিও রয়েছে চরম ঝুকিতে। অনেক বসতবাড়ী সরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে। পাকা সড়কের প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকার পাকা সড়কে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। অনেক স্থানে পুরো সড়কই ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী আঃ সালাম, শহিদুল ইসলাম, কামাল মন্ডল বলেন, নারুয়া বাজার থেকে মরাবিলা সড়কটি ভেঙ্গে নদীগর্ভে চলে যাওয়ার ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। অপরিকল্পিত ভাবে খনন করে মাটি বিভিন্ন ইট ভাঁটা ও স্থানীয় লোকজনের নিকট বিক্রি করায় এ ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। কৃষি প্রধান এলাকা হওয়ায় সরকারী সড়ক ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার ফলে যানবাহন চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। এতে এলাকার প্রায় ৫শতাধিক পরিবারের মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। পায়ে হেটে ছাড়া চলাচল করতে পারছে না, ফলে যানবাহন চলাচল সম্পুর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকেই বাড়ী-ঘর সরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে। ঝুকিতে রয়েছে অনেক বসতঘর।
তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো জানান, চত্রা নদীটি যেভাবে গভীর করে খনন করা হয়েছে তার কোন প্রয়োজন ছিল না। তারপরও তা খনন করেছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে নদীর দু,পাড়ে ভাঙ্গন দেখা দেয়। এটা সরকারের প্রতিনিধিদেরকে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত। সরকার যখন টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে সারা দেশে কাজ করছেন, ঠিক সেই মুহুর্তে অপ্রয়োজনীয় গভীর চত্রা নদী খনন পরিচালনা করতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সম্পুর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ করেছেন। এটা কি টেকসই উন্নয়ন।
নারুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আবদুস সালাম মাষ্টার বলেন, আমি গতকাল সকালে ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় গিয়েছিলাম। পাকা সড়ক নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন এ অঞ্চলের মানুষের চলাচল করা চরম কষ্টের হয়ে দাড়িয়েছে। আসলে ভেকু দিয়ে নদীর পাড় কেটে সড়কের স্বাভাবিকতা নষ্ট করে কাজ করা ঠিক হয়নি। গত বছরও চত্রা নদী খননের ফলে ভেঙ্গেছিল। কিন্তু সে সকল সড়ক মেরামত না করেই সড়কের পাশে আগলা মাটি দিয়ে ভরাট করার ফলে পানি হ্রাসের সাথে সাথে সড়কসহ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে বালিয়াকান্দি উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এস,ও মাহমুদুল হাসান বলেন, বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি।