হালিশহরের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সোহেল আক্তার খান। যিনি আবার এলাকায় সমাজসেবক হিসেবেও অনেকের কাছেই সুপরিচিত পরিচিত। তিনি সুদীর্ঘ ৪৫ বছর শিক্ষাবিস্তারে কাজ করছেন। এই শিক্ষার মাধ্যমেই আলোকিত করেছেন হাজারও পরিবার। নিরবে থেকে মানুষকে প্রাণ দিয়ে ভালবেসে এসব কাজ অব্যাহত রেখেছেন। বরাবরেই প্রচার বিমুখ। কোনো প্রকার লোভ কিংবা চাওয়া-পাওয়া থেকে নয়; বরং বিবেকের তাড়নায় শিক্ষার মাধ্যমে সমাজ ও দেশ আলোকিত করার জন্য তাঁর আপ্রাণ চেষ্টা চলছে। এতে সবাই খুশি। নিজে কষ্ট স্বীকার করেও মানুষের কল্যাণে কাজ করা এমন মানুষের সংখ্যা সমাজে খুব কম। কিন্তু সোহেল আক্তার খান তাদেরই একজন-এমন জনশ্রুতি রয়েছে এলাকায়।
একাধিক সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের হালিশহরের বি-ব্লকে ‘আনন্দ পাঠশালা’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করেন তিনি বহু আগেই। সেখানে প্লে থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চলছে মনোরম পরিবেশে শিক্ষা কার্যক্রম। এর পাশাপাশি ওব্যাট স্কুলের হালিশহর এবং ঝাউতলা ক্যাম্পাসেও একেবারে গরীব শিক্ষার্থীদের জন্য তাঁর নানা পরিকল্পনার কারণে অভিভাবকরা মহাখুশি। শিক্ষকরাও তাঁর প্রতি বিশ্বাস রেখে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি শিক্ষার বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে বিনামূল্যে শিশুদের উক্ত দুই ক্যাম্পাসে আনন্দের সাথে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। একই সাথে ‘আনন্দ পাঠশালা’ নামের স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই পর্যন্ত অনেক শিক্ষার্থীকে বিনা বেতনে পড়ার সুবর্ণ সুযোগ তৈরী করে দিয়েছেন তিনি। স্কুলটি এখনো লাভের মুখ দেখেনি। তবুও সোহেল আক্তার খান ও তাঁর স্ত্রী অক্রান্ত পরিশ্রম করছেন। প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে হালিশহরের মধ্যে বেশ সুনাম অর্জন করেছে। শিক্ষার পরিবেশও খুব ভাল। এই স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলে সন্তুষ্ট অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। টাকার অভাবে কারও লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে-এমন কথাটি মানতে নারাজ তিনি। এজন্য শুধু প্রাইমারী, হাইস্কুল ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় নয়; মেডিকেল কলেজে পড়েন এমন শিক্ষার্থীদেরও তিনি আর্থিক অনুদান দিয়ে আসছেন। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের স্কুল কিংবা কলেজে ভর্তি হতে সহযোগিতা করছেন প্রতি বছরই। বিগত সময়ে তিনি শিক্ষা এবং সামাজিক কর্মকান্ডে কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করেছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, আবারও অনেকের চিকিৎসার খরচও তিনি দিয়েছেন। কারও বিপদের খবর পেয়েও ছুটে যাচ্ছেন তিনি। পাশে থাকার চেষ্টা করছেন। নিজের সমস্ত বিলাসিতাকে তুচ্ছ মনে করেন তিনি। এজন্য এলাকায় ভাল ও মহৎ সকল কাজের সাথে তিনি সম্পৃক্ত আছেন। কেউ তাঁকে হিংসা করলেও তিনি সবাইকে ভালবাসেন। তিনি এমন সব কর্মকান্ডের পরেও অহংকারী নয়। সকলের উৎসাহে এমন ভাল ভাল কাজ করতে চান- যাতে তিনি সমাজে স্বরণীয় হয়ে থাকবেন। এমন প্রচেষ্টায় দেশের নানা জায়গায়ও ওব্যাটের কাজে ছুটে চলছেন তিনি। এছাড়াও অসংখ্য মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা এবং গরীব মেয়ের বিয়েতে তিনি সহযোগিতা করেছেন। নিজে মধ্য আয়ের একজন মানুষ হয়েও মানুষের প্রতি ভালবাসার অনেক নজির স্থাপন করেছেন। তিনি বিভিন্ন মিডিয়ায় ভাল লিখতেও পারেন। তাঁর লেখাগুলো মাদক, সন্ত্রাস ও যৌতুকের বিরুদ্ধে বরাবরেই প্রকাশিত হচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক ‘আলোকিত সৌরভের’ তিনি নির্বাহী সম্পাদক। পত্রিকার উন্নতির জন্য তাঁর অবদানও প্রশংসনীয়। অপরদিকে, ইতিপূর্বে শিক্ষা ও সামাজিক কর্মকান্ডে বিশেষ অবদানের জন্য দেশের নানা জায়গায় শতাধিক সম্মাননা পদক পেয়েছেন তিনি। হালিশহরের অভিভাবকরা মনে করেন- সোহেল আক্তার খানের মতো আরো অনেকেই এভাবেই শিক্ষা বিস্তারে কাজ করলে সমাজ আরো আলোকিত হয়ে উঠবে। বহু গরীব শিক্ষার্থী কাঙ্খিত শিক্ষা অর্জন করে পিতা-মাতার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন।