আলোর ফাঁদ বসিয়ে আমন ধান ক্ষেতের ক্ষতিকারক পোকামাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয়ের কার্যক্রম শুরু করেছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
গত রোববার সন্ধ্যায় ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন চকচকা এলাকার আলোর ফাঁদ বসিয়ে আমন ক্ষেতের পোকামাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয় কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাকিবুল হাসান, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা হাফিজার রহমান, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন, কৃষক মোফাজ্জল হোসেন, গোলাফ্ফর হোসেন প্রমুখ।
সরেজমিনে দেখা যায়, ধানের জমির পাশে তিনটি খুঁটি দিয়ে একটি বৈদ্যুতিক লাইট ঝোলানো হয়েছে। লাইটের নিচে একটি পানির পাত্র রাখা হয়েছে, পাত্রের পানিতে ডিটারজেন্ট সাবান মিশ্রিত করা হয়েছে। লাইটের আলো জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে ফসলের জমির বিভিন্ন পোকামাকড় এসে নিচে রাখা পানিতে পড়ে মারা যাচ্ছে। এভাবেই আলোর ফাঁদ ব্যবহার করে ফসলের জমিতে ক্ষতিকারক পোকামাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয়ের মাধ্যমে নিধন করার পাশাপাশি এইসব ক্ষতিকারক পোকামাকড় সম্পর্কে কৃষকদের ধারনাসহ পরামর্শ দেওয়া হয়।
আলোর ফাঁদ দেখতে আসা কৃষক মোফাজ্জল হোসেন ও গোলাফ্ফর হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমরা কৃষি অফিসের মাধ্যমে জেনেছি। এখন থেকে ফসলের জমিতে ক্ষতিকর পোকা আছে কি-না তা আলোর ফাঁদের মাধ্যমে দেখার পরেই কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক প্রয়োগ করবো। বিষয়টি প্রতিটি কৃষকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, ‘অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহারের ফলে কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে জমিতে ক্ষতিকর পোকামাকড় আছে কি-না তা নির্ণয় করতে পারবেন। এতে ফসল উৎপাদনে খরচ কমে হওয়ার পাশাপাশি বিষমুক্ত ফসল পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে উপজেলার কিছু কিছু এলাকার আমন ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ আক্রমণ করতে পারে। যাতে কৃষকদের ফসলে ব্লাস্ট রোগ আক্রমণ করতে না পারে সেজন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শুরু করে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা প্রতিদিন কৃষকদের জমিতে সরেজমিনে গিয়ে রোগ নিণয়সহ পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়াও কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে লিফলেট বিতরণ, স্থানীয় পত্রিকায় সচেতনতামূলক সর্তকতা বিজ্ঞপ্তিসহ এলাকায় এলাকায় কৃষক সমাবেশ করা হচ্ছে।