বিরলে পৃথক দুদিনে দু’টি ধর্ষন ও ১ টি ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে থানায় পৃথক পৃথক অভিযোগ দায়েরের পর একটি ঘটনায় মামলা রুজু হয়েছে। রুজুকৃত মামলার ভিকটিমকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য থানা পুলিশ দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেছে। অপর পৃথক দু’টি ঘটনা তদন্তাধীন রয়েছে। থানা পুলিশ অভিযুক্ত আসামীদেরকে আটকের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছে।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে ভূক্তভোগী গৃহবধূ জানান, ২৯ অক্টোবর/২০২০ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার ১১ নং পলাশবাড়ী ইউপি’র এক দিনমুজুরের স্ত্রী গরুর ঘাস কাটতে বাড়ির পাশের ধান ক্ষেতে গেলে ইভিরামপুর (বাহইল) গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর পুত্র ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একরামুল হক (৪০) ওই গৃহবধূকে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল বিষয়টি ধামচাপা দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে ২ নভেম্বর সোমবার রাতে ধর্ষিতা বাদি হয়ে ধর্ষক একরামুল হককে আসামি করে বিরল থানায় একটি এজাহার দায়ের করে। বিরল থানায় ৩ নভেম্বর মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট ধারায় ১ নং মামলা রুজু করে পুলিশ ভিকটিমকে পরদিন ৪ নভেম্বর বুধবার দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করে।
অপরদিকে, ২৯ অক্টোবর গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কাশিডাঙ্গা (সরকারপাড়া) গ্রামের মৃত শামসুদ্দিনের পুত্র শাহ আলম (৪০) একই গ্রামের সাতবাড়ী এলাকার মৃত তামির মোহাম্মদের পুত্র মকবুল হোসেন এর ধানক্ষেতের আইলের মাঝখানে ঘাস কাঁটার সময় পিছনদিক থেকে এসে হঠাৎ মুখ চেপে ধরে জোর পূর্বক ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টা করতে থাকে। নিজ ইজ্জত রক্ষার্থে আসামীর হাত কামড়ে ভিকটিম মুখ হতে হাত সরিয়ে চিৎকার করলে পার্শ্ববর্তী জমিতে ঘাস কাটতে থাকা এলাকার মহিলাসহ অন্যান্যরা এগিয়ে এলে শাহ আলম দৌড়ে পালিয়ে যায়। স্বাক্ষীরা ঘটনার বিস্তারিত শুনে ভিকটিমকে উদ্ধার করে বাড়ীতে নিয়ে এলে ভিকটিম স্বামীসহ থানায় এসে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। ঐদিনই থানার এসআই নাজমুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌছে স্বাক্ষ্য প্রমাণ ও ভিকটিমের পরিধেয় ছেড়া কাপড়সহ অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করে। ঘটনার পর হতে অভিযুক্ত শাহ আলম গা ঢাকা দিয়েছে। পুলিশ অভিযুক্ত শাহ আলমকে গ্রেফতারের জন্য বেশ কয়েকদফা চেষ্টা চালিয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। শাহ আলমের পরিবারের লোকজনের অব্যাহত হুমকির মুখে ভুক্তভোগীসহ পরিবারের সবাই চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে দাবি করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এছাড়াও, বিরল উপজেলার শহরগ্রাম ইউনিয়নের নরশিংপাড়ার কেরাম উদ্দীনের পুত্র প্রেমিক সাগর (২০) বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অষ্টম শ্রেনীর এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করলে ঘটনায় গত ২ নভেম্বর সোমবার রাতে ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক বাদী হয়ে বিরল থানায় একটি এজাহার দাখিল করে।
বিরল থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ শেখ নাসিম হাবিব জানান, দিনমুজুরের স্ত্রী ধর্ষণের ঘটনায় মঙ্গলবার বিকালে থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ভিকটিমকে ডাক্তারী পরীক্ষা শেষে আদালতে জবানবন্দী প্রদানের প্রক্রিয়া চলছে। তবে অপর ঘটনাগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।