বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে “হোম এ্যাসাইনমেন্ট” পরীক্ষার নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ বিষয়টি স্বীকার করলেও তারা বলছেন টাকা আদায়ে কাউকে চাপ দেওয়া হচ্ছে না। শুধু বেতন ও সেশন ফি নয়, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিভাবকদের সঙ্গে অশোভন আচারণ করারও অভিযোগ করেছেন একাধিক অভিভাবক।
০৫ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে রহমতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গেলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও বিভিন্ন সূত্রে সঙ্গে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, রহমতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শেণি পর্যন্ত ৭শত ৭৮ জন শিক্ষার্থীর প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৫শ থেকে ২৫শ টাকা পর্যন্ত উত্তোলন করছেন প্রতিষ্ঠানটি। হিসাব অনুযায়ী সরকারী নিয়মের তোয়াক্কা না করে করোনা মহামারীর মধ্যে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবিনাশ চন্দ্রগাইন নিজের খেয়াল খুসিমত সহকারী শিক্ষদের নিয়ে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকা উত্তোলন করেন। রহমতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই বিদ্যালয়ে করোনাকালে হোম “হোম এ্যাসাইনমেন্ট”র নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১৫শ থেকে ২৫ শ করে টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এই হিসাবে বিদ্যালয়ের ৭শ ৭৮জন জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০ লক্ষাধিক টাকা উত্তোলন হওয়ার কথা। তবে এটাকা উত্তোলনের শিক্ষার্থীদের দেওয়া হচ্ছেনা কোন মানি রিসিট। গত ৩ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হোম এ্যাসাইনমেন্টর সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মোঃ জাহিদ গাইন মোঃ জাহিদ হোসেন ,কাজল দাসের অভিযোগ করোনার মধ্যে স্কুল বন্ধ ছিল,তাদের আয়ের কোনো পথ নেই, প্রধান শিক্ষক অভিনাশ চন্দ্র রায় শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষনাকে তোয়াক্কা না করে নিয়মবর্হিভূতভাবে করোনার মধ্যে হোম এ্যাসাইনমেন্ট’র নামে বয়েকা বেতন ও সেশন ফি,বিদ্যুৎ বিল,পানি বিলের নামে বে-আইনী ভাবে অর্থ আদায় করছেন।
এদিকে উপজেলা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন জোবায়েদা বলেন উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের জানিয়ে দিয়েছেন করোনার কারণে শিক্ষার্থীদেরকে হোম এ্যাসাইনমেন্ট’র সময় কোন ধরণের ফি নেওয়া যাবেনা। রহমতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবিনাশ চন্দ্রের বিরুদ্ধে টাকা নেয়ার অভিযোগ প্রমানিত হলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
হোম এ্যাসাইনমেন্টর নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন ও সেশন ও অনলাইন ক্লাসের নামে ফি আদায়ের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক অবিনাশ চন্দ্র রায়ের কাছে জানতে চাইলে উল্টো তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্ন করেন,মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কি শিক্ষকদের বেতন দিবেন ? তা হলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হবে না!
প্রধান শিক্ষক অবিনাষ চন্দ্র রায় বলেন এ্যাসাইনমেন্ট বাবদ কোনো টাকা নেয়া হয়নি,বকেয়া টাকা নেয়া হচ্ছে অলাইনের ক্লাস কারনোর ফিসহ আনুষঙ্গিক খরচ নেওয়া হচ্ছে শিক্ষকদের বেতন দেয়ার জন্য। শিক্ষার্থীদের হাতে এ্যাসাইনমেন্ট দেয়ার সময় টাকা নেয়ার বিষয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন জোবায়েদা বলেন শিক্ষামন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে এ্যাসাইনমেন্ট দেয়ার সময় টাকা নেয়ার কথা শুনেছি। এ বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করার কোনো বিধান নেই। বিষয়টি তদন্ত করে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।