ফরিদপুর জেলার চলতি রবি মৌসুমে আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজের বাম্পার ফলন আশা করছে চাষিরা। আর মাত্র এক মাসের মধ্যেই ফরিদপুরের বাজারে উঠবে নতুন পেঁয়াজ। নতুন পেঁয়াজ উঠলেই কমতে শুরু করবে পেঁয়াজের দাম। নতুন পেঁয়াজ উঠার সময় বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করার দাবী চাষিদের।
পেঁয়াজ উৎপাদনে সারা দেশের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ফরিদপুর জেলা। ভাল মানের ও উন্নত জাতের পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য খ্যাত রয়েছে এ জেলার। এ জেলায় তিন ধরনের পেঁয়াজ উৎপাদন হয়ে থাকে- মুড়িকাঁটা, হালি ও দানা পেঁয়াজ। বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে ফরিদপুর জেলার চরাঞ্চলের চাষিরা আগাম জাতের মুড়িকাঁটা পেঁয়াজ চাষ করেছে। চাষিরা এখন ক্ষেত পরিচর্যা করছেন আর স্বপ্ন দেখছেন ভাল ফলনের।
চলতি মৌসুমে সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল, চরমাধবদিয়া, ডিক্রীরচর ইউনিয়নে ব্যাপক পরিমানে পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। এছাড়াও জেলার সালথা, ভাঙ্গা ও সদরপুর উপজেলায় কৃষকেরা অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে মুড়িকাঁটা পেঁয়াজের আবাদ করে থাকে। পেঁয়াজ আবাদের ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মাথায় কৃষকেরা ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলতে পারে। আর মাত্র কয়েকদিন পর চাষিদের ঘরে আসবে নতুন পেঁয়াজ।
চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের আফজাল মন্ডলের হাটের কৃষক আয়ুব আলী বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে পেঁয়াজ লাগিয়েছি। আশা করছি ফলন ভালো পাব। আর মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে পেঁয়াজ বাজারে তুরতে পারব। আমাদের পেয়াজ যখন বাজারে তুলব, তখন যেন সরকার ভারত থেকে পেয়াজ আমদানি না করে। ভারত থেকে পেয়াজ আমদানি না করলে আমরা লাভবান হব। আর সার-ওষুধ এর দাম কমালে আমরা আরো বেশী করে পেঁয়াজ আবাদ করতে পারব।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায় চলতি বছর ফরিদপুর জেলায় ৬ হাজার ৫০০হেক্টের জমিতে মুড়িকাঁটা পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে।
এদিকে সকালে সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের আফজাল মন্ডলের হাটের পাশের মুড়িকাঁটা পেঁয়াজের মাঠ পরিদর্শন করেছেন কৃষি তথ্য সার্ভিস এর পরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তুহিনুর রহমান খোকন মন্ডল। এ সময় তিনি পেঁয়াজ চাষিদের সাথে কথা বলেন এবং পেঁয়াজের উৎপাদন কিভাবে বৃদ্ধি করা যায়, সে বিষয়ে চাষিদের পরামর্শ প্রদান করেন। তিনি বলেন, বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকার চাষিদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, মাননীয় কৃষি মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশ ক্রমে আমরা প্রকৃত পেঁয়াজ চাষিদের নামের তালিকা করছি। প্রকৃত পেঁয়াজ চাষিদের ৪%সুদে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। যাতে চাষিরা পেঁয়াজ এর চাষ সঠিক ভাবে করতে পারে।