সাকিনা বেগম এখন সেজেছেন সাথী। নামের সাথে মিলের সুযোগ নিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে মাতৃত্বকালীন ভাতা উত্তোলন করে ফেলেছেন সাকিনা। জালিয়াতি পাকাপোক্ত করতে কৌশলে অন্য জনের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি ব্যবহার করেছেন সাকিনা। তিনি আবেদনে গোপন করেছেন স্বামীর নাম। উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আখিঁতারা গ্রামের কাজী সানু মিয়ার স্ত্রী সাকিনা বেগমের বিরূদ্ধে নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গত ৪ নভেম্বর এই জালিয়াতির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন কাজী সাথীর স্বামী শাহবাজপুর গ্রামের মো. সাকির হোসেন।
অভিযোগপত্র ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সাকিনা ও সাথীর বাবার বাড়ি ৪ নং ওয়ার্ড আখিঁতারা গ্রামে। সাকিনার বাবার নাম মো. বাবুল মিয়া। আর কাজী সাথীর বাবার নাম মুরাদ মিয়া। সাকিনার স্বামী কাজী সানু মিয়ার বাড়ি ও আখিঁতারা গ্রামেই (৪নং ওয়ার্ড)। ইউপি সদস্য মো. মোশাররফ হোসেনের আপন ভাইয়ের মেয়ে সাকিনা। সাথীর স্বামীর বাড়ি শাহবাজপুরে। গর্ভবতী হওয়ায় ২০১৯ সালের শেষের দিকে মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য আবেদন করেন কাজী সাথী। সবকিছু বিধি সম্মত হওয়ায় ভাতাভূক্ত হয় সাথী। গত কয়েক দিন আগে ভাতার টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে ধরা পরে জালিয়াতি। সেখানে দেখা যায় মুরাদ মিয়ার মেয়ে ও সাকির হোসেনের স্ত্রী কাজী সাথী ভাতার তালিকায় নেই। নামের মিল থাকায় কৌশলে সাথীর আইডি কার্ড ব্যবহার করে তথ্য গোপনের মাধ্যমে মো. বাবুল মিয়ার মেয়ে ও কাজী সানু মিয়ার স্ত্রী সাকিনা বেগম সাথী সেজে দুইবারে মাতৃত্বকালীন ভাতার ৯ হাজার ৫৯৮ টাকা উত্তোলন করে ফেলেছেন। ব্যাংক এশিয়া (এজেন্ট ব্যাংকিং) শাহবাজপুর শাখা থেকে উত্তোলিত ষ্ট্যাটমেন্টে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর সাথীর আইডি কার্ড ব্যবহার করে হিসাব খুলেছেন সাকিনা। সেখানকার সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর-১০৮৩৪১২০৩৯৯৭১। সাকিনা বেগম ওই হিসাব থেকে গত ১৯ মে উত্তোলন করেছেন ৭ হাজার ১৯৭ টাকা। ৮ জুলাই উত্তোলন করেছেন ২৪০০ টাকা। ইউনিয়ন পরিষদ সূত্র জানায়, বর্তমানে মাতৃত্বকালীন ভাতা মাসে ৮০০ টাকা। ৩ বছরে একজন মহিলা পাবেন ২৮ হাজার ৮শত টাকা। নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. জিয়াউর রহমান বলেন, তালিকাটি আমার সময়েই হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। জানতে পেরেছি কাজটি উপজেলা থেকে হয়েছে। সপ্তাহ দিন আগে জালিয়াতির বিষয়টি আমি জেনেছি। চেয়ারম্যান সাহেবকে জানিয়েছি। অভিযুক্ত সাকিনার স্বামী কাজী সানু মিয়া বলেন, সাথী আমার ভাতিজি। সাকিনা স্ত্রী। সমঝোতার মাধ্যমেই সাথীর কার্ড নিয়ে আমার স্ত্রী’র মাতৃত্বকালীন ভাতা নিশ্চিত করেছিলাম। কিন্তু এখন টাকা উত্তোলন দেখে তারা অভিযোগ করেছে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম বিষয়টি নিস্পত্তি করে দিয়েছিলেন। তারা মানেননি। সামাজিক ভাবেও চেষ্টা করেছি। আপস করতে পারিনি। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফারজানা প্রিয়াংকা বলেন, অভিযোগটি আমি দায়িত্ব গ্রহনের আগের। তাই বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এখন জানলাম। খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিব।