মাস্ক ব্যবহারের নিদের্শনা মানছেন না বাবুগঞ্জের অধিকাংশ মানুষ। মসজিদ,মন্দির,গির্জাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অনায়াসেই মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই প্রবেশ করছেন অনেকেই। গত ৮ নভেম্বর ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ বিভিন্ন উপাসনালয়ে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়। কিন্তু সেটাও মানছেন না বাবুগঞ্জের বিভিন্ন উপাসনালয়ে আগত লোকজন। বাবুগঞ্জে বেশ কয়েকটি মসজিদ ঘুরে দেখা গেছে মুসল্লীদের বেশরিভাগই কোন রকম স্বাস্থ্য সুরক্ষা না মেনেই মসজিদে প্রবশে করছে। এতে করে করোন সংক্রমণের ঝুঁকি এ উপজেলা আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে বাসস্থানের বাইরে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হলেও অধিকাংশ মানুষই তা মানছেন না। দিন যত যাচ্ছে, লোকজন ততই মাস্ক ব্যবহারে উদাসীন হচ্ছে। মাস্ক ছাড়া বাইরে না যেতে সরকারের পক্ষ থেকে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়াসহ নানা মাধ্যমে প্রচার চালানো হলেও তাতে কাজ হচ্ছে না। মাস্ক না পরলে জেল-জরিমানার ঘোষণা দেওয়া হলেও বাবুগঞ্জে এর প্রয়োগ সীমিত। ফলে এ উপজেলার জনাধারণের মাঝে মাস্ক ব্যবহারে বেশ উদাসিনতা দেখা যাচ্ছে।
বাবুগঞ্জ উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, মঙ্গলবার সকালে বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থানরত পথচারী এবং বিভিন্ন কাজে আগত জনসাধারণের অধিকাংশের মুখে নেই মাস্ক। মসজিদ, মন্দির, গির্জাসহ অন্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে মাস্ক ব্যবহারে শৈথিল্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। যাদের রয়েছে তাও তাদের পকেটে, এছাড়াও অনেকে এটির সঠিক ব্যবহার না করে দাড়িতে ঝুলিয়ে রাখছেন।
এর আগে গত ২১ জুলাই ১১টি ক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ নির্দেশ জারি করলেও, তা নিশ্চিতে বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের নেই তেমন কোনো উদ্যোগ। এসমকি আগের বিজ্ঞপ্তির ধারাবাহিকতায় গেল ৮ নভেম্বরের জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে- মসজিদে সব মুসল্লির মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। আবশ্যিকভাবে মাস্ক পরে প্রবেশের জন্য প্রতি ওয়াক্ত নামাজের আগে মসজিদের মাইকে প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি এ বিষয়ে মসজিদের ফটকে ব্যানার প্রদর্শন মসজিদ কমিটিকে নিশ্চিত করতে হবে। এর ছিঁটে ফোঁটাও উপজেলার একাধিক মসজিদ ঘুরে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সুবাস সরকার বলছেন, গোষ্ঠীতে সংক্রমণ (কমিউনিটি ট্রান্সমিশন) ঠেকাতে মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। করোনা মোকাবিলায় যেসব দেশ সফল হয়েছে, তাদের প্রধান অস্ত্র ছিলো সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি। তিনি বলেন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাবুগঞ্জে ১২১ জনে দাঁড়িয়েছে। আসন্ন শীতে করোনা প্রভাব আরো বাড়তে পারে বলে এর ঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক ব্যবহারের অনুরোধ করেন।
উপজেলা সদরে অবস্থানরত খোরশেদ আলম বলেন, মাস্ক মুখে দিয়ে রাখলে অনেক সময় দম লেগে যায়। শ্বাস করতে কষ্ট হয় এজন্য অনেক সময় মাস্ক মুখের নিচে দিয়ে রাখি। ইজিবাইক চালক মোঃ গিয়া উদ্দিন বলেন, করোনাভাইরাসের প্রথম দিকে আতঙ্ক ও প্রশাসনিক তৎপড়তা বেশি ছিলো বলে সবাই মাস্ক ব্যবহার করতে খুব আগ্রহী ছিল। কিন্তু বর্তমানে অনেকেই মাস্কই ব্যবহার করে না।
বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আমীনুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে সবাইকে সচেতনতা মূলক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। উপজেলা বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। মাস্ক ব্যবহারে শৈথিল্য পরিলক্ষিত হলে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।