রাজবাড়ীতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে রোববার রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে ভূক্তভোগি তরুণী বাদী হয়ে তন্ময় দেকে প্রধান আসামি করে মোট তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
তন্ময় দে (২৪) রাজবাড়ী শহরের দক্ষিণভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বাবার নাম তপন দে। মামলায় তাঁর বাবা তপন দে ও মা শ্যামা দে’কে যথাক্রমে দুই ও তিন নম্বর আসামি করা হয়েছে।
এজাহার ও ভূক্তভোগির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তন্ময়ের সঙ্গে ওই তরুনীর পূর্ব পরিচয় ছিল। লুডুলস খাওয়ানোর কথা বলে তন্ময় তাকে বাড়িতে নিয়ে যায়। এ সময় তন্ময়ের মা-বাবা বাড়িতে ছিল। তাঁরা গানের ক্লাস নেওয়ার কথা বলে বাড়ির বাইরে যায়। এরপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তন্ময় তাকে ধর্ষণ করে। বিয়ের কথা বললে বাড়ির ঠাকুরের সামনে নিয়ে মাথায় সিঁদুর পরিয়ে দেয়। কিন্তু রেজিস্ট্র করতে বলে পরে করবে বলে জানায়। এঘটনার পর ওই তরুণী চলে আসে। পরে তন্ময়ের মা তাকে বাড়িতে নিয়ে যায়। তিনি বিয়ের আশ্বাস দেন। কয়েক মাস তন্ময়দের বাড়িতে ছিলেন ওই তরুণী। এ সময় প্রতিনিয়ত তাকে ধর্ষণ করা হতো। কিন্তু রেজিস্ট্র করে বিয়ের কথা বললে তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এরপর থেকে তন্ময়ও যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
জানতে চেয়ে তন্ময়ের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু মুঠোফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তন্ময়ের বাবা তপন দে। তিনি বলেন, ‘মেয়েটি আমাদের সংগঠনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আসতো। সেখান থেকে তাঁর সঙ্গে আমাদের পরিচয়। আমাদের কাছে তাঁর পরিচয় গোপন করে ছিল। ময়মনসিংহ বাড়ি বলে আমাদের বাড়িতে থাকার জন্য খুব অনুরোধ করে। আমরা মানবিক কারণে তাকে বাড়িতে থাকতে দিয়ে ছিলাম। আমার ছেলে এবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করেছে। পরে জানতে পারি মেয়েটির বাড়ি শহরের হরিজনপল্লীতে। পরিচয় জানার পর তাকে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলি। এতে সে আজকাল করতে করতে অনেকদিন অবস্থান করে। অবশেষে কিছুদিন আগে সে চলে গেছে। আমাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে মামলা করেছে।
তন্ময়ের মা শ্যমা দে বলেন, তন্ময় আমার একমাত্র ছেলে। কিন্তু ওই মেয়ের চেয়ে বয়সে অন্তত ছয়-সাত বছরের ছোট। মেয়েটির বাবা পরিচ্ছন্নতা কর্মী। আমরা কেন তাকে আমার ছেলের সঙ্গে তাকে বিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেবো। মেয়েটির প্রতারণা জানার পর তাকে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলি। এতে মেয়েটি আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছে। আমার ছেলে ও আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী তসলিম আহমেদ তপন বলেন, আদালতের বিচারক বিষয়টি আমলে নিয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।