অব্যবস্থাপনার কারণে নদী খননের সুফল মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ডুবোচর খনন করে নদী ড্রেজিং হিসেবেও দেখানোর অভিযোগ রয়েছে। এতে প্রতি বছর বরাদ্দের টাকা জলে যাচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করছে যাত্রীরা।এ চিত্র লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটের। এ রুটে এবারও দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। ডুবোচরে আটকে যাওয়ার আশঙ্কায় পানি মেপে মেপে চলছে লঞ্চ ও ফেরি।
২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে তিনটি ফেরি নিয়ে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চঘাটটি চালু করে সরকার। এ ঘাটে চারটি ফেরির মধ্যে একটি ফেরি বিকল রয়েছে। প্রতিদিন ফেরিপথে তিন-চার ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়। জোয়ার এলেই নদীতে কিছুটা পানি বাড়ে। এরপর ফেরি চলাচল শুরু হয়। আর ডুবোচরে আটকে থেকে লঞ্চ চলাচল করছে পানি মেপে মেপে। এ নৌরুট দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ চলাচল করছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর নদীখননের কাজ হলেও জেলায় বিআইডব্লিউটিএ ও খননকাজ দেখভাল করার জন্য অফিস না থাকায় বরাদ্দের টাকা জলে যায়। তদারকির অভাবে বেশির ভাগ সময় খননকাজ বন্ধ থাকে।
এম ভি উপবন লঞ্চের মাস্টার রিপন হাওলাদার জানান, লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে ডুবোচরের কারণে নদীতে আটকে থাকতে হয়। কিছু লঞ্চ পানি মেপে চলাচল করছে। ডুবোচর খনন করে প্রতি বছর ড্রেজিং হিসেবে দেখানো হয়। তদারকির অভাবে ড্রেজিং হয় কাগজে-কলমে।
মজুচৌধুরীরহাট ফেরিঘাট এলাকায় দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসির পরিদর্শক পিয়ার আহাম্মদ ফরাজি জানান, লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটের লক্ষ্মীপুর থেকে মতিরহাট পর্যন্ত বেশ কিছু ডুবোচর আছে। এগুলো যে হারে খনন দেখানো হচ্ছে তাতে বোঝা যায় তদারকির অভাব রয়েছে। প্রতি বছর এভাবে নদীতে ডুবোচর খনন হওয়ায় একই স্থানে ডুবোচর দেখা দিয়েছে।
লক্ষ্মীপুরে দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসির সহকারী পরিচালক মো. কাউছার জানান, মজুচৌধুরীরহাট ফেরিঘাটের রহমত আলী চ্যানেলে ডুবোচর জেগে ওঠায় স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না ফেরি। জোয়ার-ভাটার দিকে তাকিয়ে ফেরি ও লঞ্চ ছাড়তে হয়। সঠিক সময়ে গন্তবে ফেরি ও লঞ্চ না পৌঁছায় দু-পাড়ে দিনের পর দিন আটকে আছে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক। নাব্য সংকট ও ডুবোচরের কারণে ফেরি চলাচলে সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ'র উপপরিচালক একেএম কায়সারুল ইসলাম জানান, যাত্রীসাধারণের ভোগান্তি লাঘব করার লক্ষ্যে ডুবোচর খননকাজ চলমান রয়েছে। তবে যে গতিতে চলছে, তাতে দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে ড্রেজিং কাজ শেষ হবে।