বুদ্ধি প্রতিবন্ধী একমাত্র সন্তান জাহিদকে ঘরে রেখে সংসারের আয় বাড়াতে মালা তৈরীর জন্য ফুল সংগ্রহ করতে গিয়ে আগুনে পুড়ে ছাই হলো প্রতিবন্ধী মা জায়মন পাগলীর স্বপ্ন। ছাই হলো মাথা গোঁজার ঠাই, প্রিয় সন্তান নিলো চির বিদায়। কাজ শেষে বাড়ি ফিরে সে দেখতে পায় আগুনে ঝলসানো একমাত্র সন্তানের মরদেহ ও ভস্মিভূত একমাত্র টিনের চালা ভাঙ্গা ঘরটি। এমন মর্মান্তিক ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে সহযোগীতা হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন লালপুরের প্রাকীর্তি ফাউন্ডেশন, ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নাটোরের লালপুর উপজেলার পানসীপাড়া গ্রামের মৃত শওকত আলীর বুদ্ধি ও শারীরিক প্রতিবন্ধি স্ত্রী জায়মন তার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলে জাহিদকে নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালাতেন। ভিক্ষার পাশাপাশি সে সংসারের আয় বাড়াতে ফুলের মালা বানানোর কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার ১৯ নভেম্বর সকালে ছেলে জাহিদকে ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে বাহির থেকে শিকল দিয়ে পাশের গ্রামে মালা তৈরীর জন্য ফুল সংগ্রহ করতে যায় বুদ্ধি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী মা জায়মন। এলাকাবাসীর ধারনা ঘুম থেকে জেগে জাহিদ নিজেই গ্যাস লাইট দিয়ে ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। প্রতিবেশীরা বুঝে ওঠার আগেই নিজের লাগানো আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায় জাহিদ। সেই সাথে পুড়ে যায় তাদের একমাত্র শোবার ঘরটি। লালপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল শিশু জাহিদের লাশ উদ্ধার করে। জাহিদ স্থানীয় ছায়া প্রতিবন্ধি বিদ্যালয়ের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শাখার প্রাক-প্রাথমিক শ্রেনীর ছাত্র ছিল। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। বাদ আসর জানাজা শেষে জাহিদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
এমন মর্মান্তিক ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে শাড়ী, কম্বল, মশারী, হাড়ি-পাতিল, থালা-বাসন ও চাউল- ডাউলসহ খাদ্য সামগ্রীসহ প্রয়োজনীয় সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন লালপুরের প্রাকীর্তি ফাউন্ডেশন। এ সময় দুড়দুড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হান্নানসহ এলাকাবাসীও আর্থিক সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন।