নীলফামারীর সৈয়দপুরে খাস জমি দখল করে বাড়ি নির্মাণ ও চাঁদাবাজীসহ হয়রানীর অভিযোগ দেয়ায় প্রাণ নাশের হুমকি প্রদানের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন একেএম রেজাউল করিম পাটোয়ারী নামে এক ব্যক্তি। ২১ নভেম্বর শহরের সৈয়দপুর প্লাজা মার্কেটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের ধলাগাছ মৌজায় তার ২৫ শতক জমি রয়েছে। ওই জমির সাথে একিভূত করে সরকারী খাস জমি ৯ শতকসহ একই দাগভুক্ত করা হয়েছে। যার দাগ নং ২৫০৯। ওই দাগের খাস জমি দখল করেছেন ওই এলাকার মৃত. ময়জুল হকের ছেলে ফযেজ আহমেদ। ফয়েজ আহমেদ তার বাড়ির সাথে থাকা তার ফুফাতো ভাই কামাল হোসেনের জমি নিয়ে বদল হিসেবে ওই খাস জমিতে বাড়ি করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে গত ৮ সেপ্টেম্বর কামারপুকুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে খাস জমি উদ্ধারের জন্য আবেদন করায় রেজাউল করিমসহ আরও ৫ জন আবেদনকারীকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করাসহ মামলা মোকদ্দমায় ফেলে ক্ষতিগ্রস্থ করার হুমকি দিয়েছেন। এমনকি গত ১৯ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে ফয়েজ আহমেদ সত্যকে ধামাচাপা দিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সংবাদকর্মীদের বিভ্রান্ত করছে। এ সময় তিনি উল্লেখ্য করেন যে,বিগত ১৯৬১ সালের ২৩ ডিসেম্বর ফয়েজের বাবা মৃত ময়জুল হক তার ৩২ শতক জমি মো. মফিজ উদ্দিন, পিতা আবদুল গফুরের কাছে বিক্রি করেন। জমি বিক্রেতারা ওইসময় ৬২’এর রেকর্ড অনুসারে মৌখিক বন্টননামা হিসেবে জমি বিক্রী করেন। মফিজ উদ্দিনের মৃত্যুর পরে তার দুই ছেলে আবদুল আজিজ ও মতিয়ার রহমানের নামে ২৫ শতক (বিএস) রেকর্ডভুক্ত হয়। বাকি ৭ শতক খাস খতিয়ানের অন্তর্ভূক্ত হয়। পরবর্তীতে ওই ২৫ শতক জমি খারিজ মূলে প্রথমে আবদুল আজিজ ২০০৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সাড়ে ১২ শতক আমার নামে বিক্রী করেন এবং তা খারিজভুক্ত হয়। বাকি সাড়ে ১২ শতক মতিয়ার রহমান ২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রেজাউল করিম ও সামসুজ্জোহার কাছে বিক্রী করেন। যার বিএস দাগ ২৫০৯। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট কামারপুকুর ইউপি চেয়ারম্যানের নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে মাপজোখ করে ফয়েজ সাড়ে ৩ শতক খাস জমি নিজ দখলে নিয়ে তার ফুফাতো ভাই কামালকে বাড়ি করে দেন। যা ১নং খাস খতিয়ানের অন্তর্ভূক্ত। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে মোস্তাকিমসহ জমিতে একতরফাভাবে জোড় পূর্বক খুটি গাড়ে। ওই জমিতে কার্ডিনাল আলু চাষ করি। তাই থানায় অভিযোগ দায়ের করলে কোন মিমাংসা না হওয়ায় আদালতের শরনাপন্ন হই। যার কেস নং ১৯/২০। যা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। কোর্টের নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আমাদের পক্ষে রিপোর্ট প্রদান করেন। এরপরও মোস্তাকিমকে দিয়ে আবার ওই জমির উপর ফয়েজ বাটোয়ারা মামলা করায়। এ মামলাও আদালতে বিচারাধীন। অথচ ইতোপূর্বে মোস্তাাকিমের বাবা মফিজ উদ্দিন কর্তৃক ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে দুই দলিল মূলে মৃত তছির উদ্দিনের কাছে মোট ৩৪ শতক জমি বিক্রী করেন। যা বিএস রেকর্ড অন্তর্ভূক্ত হয়। রেকর্ড নং ২৫০৭। তাছাড়া আনিছুর রহমান, পিতা কাছিমুদ্দিনের কাছে ধলাগাছ মৌজার জনৈক শমসের আলীর সাড়ে ৫ শতক জমি ক্রয় করেন এবং সে জমিতেও আনছার আলী তার ছেলে অবৈধভাবে দখল করে বাড়িঘর তৈরী করেন। পাশে সুলতান নামে জনৈক পুলিশ ওই আনিছুর রহমানের কাছ থেকে সাড়ে ১২ শতক জমি ক্রয় করলে সে জমি থেকেও আড়াই শতক জমি জোড় পূর্বক বের করে নেয়া হয়। তাছাড়া আনিছুরের বড় ভাই মনছুরের জমিও দখলের পায়তারা করলে সেখানেও মামলা মোকদ্দমার সৃষ্টি হয়। এদিকে মোস্তাকিমের বাবা দুই দলিলমূলে ইতোপূর্বে জমি বিক্রি করলেও ২৫০৭ দাগে অর্থাৎ তছির উদ্দিনের বংশধরদের (মনিরুজ্জামান) জমির উপর জোড় পূর্বক খুটি গাড়ে। পরবর্তীতে ফয়েজের মাধ্যমে টাকা পয়সা প্রদান করে ওই জমিতে প্রাচীর নির্মাণ করতে সক্ষম হয়। তাছাড়া আমাদের কাছেও জমির মিমাংসা করে দেয়ার নামে ৫ লাখ টাকা দাবি করে ফয়েজ। সময় সাপেক্ষে তা প্রমান দেয়া সম্ভব। ফয়েজ কর্তৃক খাস জমি দখল ও বাড়ি নির্মাণসহ চাঁদাবাজির অভিযোগে করা আমার আবেদনের তদন্ত কর্মকর্তা হয়ে একজন সরকারী কর্মচারী হিসেবে ইউপি ভূমি কর্মকর্তা সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হওয়া রহস্যজনক বলে আমি মনে করি। সংবাদ সম্মেলনে প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে ফয়েজ আহম্মেদ বলেন আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়।