কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার উসমানপুর কোনাপাড়া গ্রামে মসজিদের ইমাম ও মক্তবের শিক্ষক হাফেজ মিজান মিয়াকে (২৬) হত্যার দায়ে আসামি ময়না আক্তারকে (২৬) যাবজ্জীবন ও মনির হোসেনকে (২২) ৭ বছরের কারাদ- দিয়েছে আদালত। দ-প্রাপ্ত দুই আসামি সম্পর্কে ভাইবোন হয়। রায়ে ময়না আক্তারকে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন, দুই লাখ টাকা অর্থদন্ড- এবং ২০১/৩৪ ধারায় ৭ বছরের কারান্ডসহ আরও ৫০ হাজার টাকা অর্থদ- প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া অপর আসামি মনির হোসেনকে ২০১/৩৪ ধারায় ৭ বছরের কারাদ- ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।
(২২ নভেম্বর) রোববার সকালে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম আসামীদের উপস্থিতিতে উপর্যুক্ত রায় ঘোষণা করেন। দ-প্রাপ্ত আসামি ময়না আক্তার কুলিয়ারচর উপজেলার কোনাপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলামের স্ত্রী এবং মনির হোসেন পাশর্^বর্তী মনোহরপুর গ্রামের দুলু মিয়ার ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলাই পূর্ব ভরাটি গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে হাফেজ মোঃ খোকন ওরফে মিজানুর রহমান ওরফে মিজান মিয়া জেলার কুলিয়ারচরের উসমানপুর কোনাপাড়া গ্রামে একটি পাঞ্জাখানা মসজিদে প্রায় ৫ ধরে ইমামতি ও মক্তবে আরবি শিক্ষকতা করতেন।
২০১৬ সালের ১৪ আগস্ট এশার নামাজের পর হইতে পরদিন বিকেলের মধ্যে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা পরস্পর যোগসাজসে হাফেজ মিজানকে গলায় রশি দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। পরে নিহতের লাশ বস্তাবন্দি করে গুম করাকালে স্থানীয়রা দেখে ফেলে। এ সময় লাশ বহনকারী অজ্ঞাত ব্যক্তিরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এ ব্যাপারে নিহতের ভাই নূরুল হক বাদী হয়ে ময়না আক্তার ও মনির হোসেনের নামাল্লেখ করে কুলিয়ারচর থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-১১) দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা থানার এসআই মোঃ কোহিনূর মিয়া অভিযুক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ২২ এপ্রিল আদালতে চূড়ান্ত চার্জশীট দাখিল করেন। সাক্ষ্য-জেরা শেষে রোববার আদালতের বিচারক উপর্যুক্ত রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি অ্যাডভোকেট যগেশ^র রায় ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট আব্দুল কুদ্দুছ মামলাটি পরিচালনা করেন।