বাংলাদেশের প্রাচীনতম পৌরসভার মধ্যে অনতম ঝালকাঠি পৌরসভা ১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তখন তৃতীয় শ্রেণির পৌরসভার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত ছিলো। স্বাধীনতা পরবর্তি সময়ে ঝালকাঠি পৌরসভা দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হয়। ২০০০ সালে উপ নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ঝালকাঠির কৃতী সন্তান আমির হোসেন আমু ঝালকাঠি পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় রূপান্তর করেন। ১৬.০৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনে ৯টি ওয়ার্ড ও ৪৭টি মহল্লায় ৫৩.৮৫ একর জমি নিয়ে পৌর এলাকা। সরকারী-বেসরকারী ২শতাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে পৌর এলাকায়। এছাড়াও বিভিন্ন আকৃতির প্রায় ৬৮ কিলোমিটার রাস্তা ও প্রায় ২৪ কিলোমিটার ড্রেন রয়েছে। এসবই পৌরসভার উন্নয়নমূলক কাজে অন্তুর্ভুক্ত রয়েছে। পৌর মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার দায়িত্ব গ্রহণের পর পঞ্চাশ কোটিরও বেশি টাকার কাজ করিয়েছেন বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে। “চলমান কাজ সমূহ সম্পন্ন হলে আগামী পঞ্চাশ বছরেও এসব উন্নয়ন কাজে কাউকে হাত দিতে হবে না বলে জানান মেয়র।”
ঝালকাঠি পৌরসভা প্রকৌশলী বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, জলবায়ু প্রকল্পের অধীনে ঝালকাঠি পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের নতুন কলেজ রোড থেকে বাহের রোড হয়ে ডা. রশিদ এর বাসা পর্যন্ত ৩৭ লাখের বেশি টাকা ব্যয়ে আরসিসি ড্রেন নির্মাণ কাজ অর্ধসম্পন্ন। ১ ও ৪নং ওয়ার্ডের নতুন কলেজ রোড হতে থেকে বাসন্ডা নদী পর্যন্ত ১কোটি ৩৮লাখের বেশি টাকা ব্যয়ে আরসিসি ড্রেন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন। ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সাধনার মোড় থেকে গুরুধাম নদী পর্যন্ত ১কোটি ২৭লাখের বেশি টাকা ব্যয়ে আরসিসি ড্রেন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন। ৫ ও ৯নং ওয়ার্ডের এমপি আমির হোসেন বাড়ির পিছন হতে সুগন্ধা নদী পর্যন্ত প্রায় ৩কোটি টাকা বরাদ্ধে আরসিসি ড্রেন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ৪নং ওয়ার্ডের উপজেলা পরিষদ হতে ডাক্তারপট্টি খালে ৭৮ লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দে আরসিসি ড্রেন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ৮নং ওয়ার্ডের সদর চৌমাথা থেকে টাউন মসজিদ পর্যন্ত প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে আরসিসি ড্রেন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন। একই ওয়ার্ডের থানা সংলগ্ন ডা. মোহেব্বল এর বাসা থেকে সুগন্ধা নদী পর্যন্ত ৩১লাখের বেশি টাকা বরাদ্দে আরসিসি ড্রেন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ৯নং ওয়ার্ডের মহিলা মাদ্রাসা থেকে থেকে সুগন্ধা নদী পর্যন্ত ২০লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে আরসিসি ড্রেন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন।
গুরুত্বপুর্ণ শহর অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পে পৌর শহরের ওয়ার্ডে কামারপট্টি মোড় থেকে পুরাতন কলেজ রোড হয়ে ব্র্যাক মোড় পর্যন্ত রাস্তা এবং ফায়ারসার্ভিস মোড় থেকে নতুন কলেজ মোড় পর্যন্ত ৭কোটি ৬৮ লাখেরও বেশি টাকা বরাদ্ধে আরসিসি রাস্তা নির্মাণ কাজ সম্পন্ন। বাসন্ডা ব্রিজের দক্ষিণ পাশের প্রোচ হতে মুন্সিবাড়ি জামে মসজিদ পর্যন্ত এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের অফিস হতে হোসেন আলী জামে মসজিদ পর্যন্ত ্্্্৬৪ লাখেরও বেশি টাকা বরাদ্ধে রাস্তা নির্মাণ কাজ সম্পন্ন। নতুন কলেজ রোড হতে পালবাড়ি পর্যন্ত রাস্তা, নতুন কলেজ রোড (পাবলিক লাইব্রেরির সামনে) হতে টিএন্ডটি পর্যন্ত রাস্তা ও ড্রেন, রামনগর বায়তুননুর জামে মসজিদের প্রফেসর গোলাম মোস্তফা বাদশা’র বাড়ি হয়ে বিশ্বরোড পর্যন্ত রাস্তা, কাপুড়িয়া পট্টি মোড় থেকে বাসন্ডা নদী পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা, সড়ক ও জনপদ অফিস থেকে নতুন কবরস্থান পর্যন্ত আরসিসি চেইনেজ রাস্তা ও ড্রেন ২কোটি ৮৩ লাখ টাকা বরাদ্দে কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২কোটি ৬৬ লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দে মুন্সি জাহাঙ্গির সড়ক হতে দত্তবাড়ি হয়ে বটতলা জামে মসজিদ পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা, বাহের রোড হতে পশু হাসপাতাল পর্যন্ত টিএন্ডটি রাস্তা বিসি দ্বারা পুনর্নিমাণ, টিএন্ডটি রাস্তা হতে পালবাড়ি রাস্তা পর্যন্ত শেখ মুজিব সড়কে বিসি দ্বারা পুননির্মাণ, গুরুদাম ব্রিজ হতে উত্তরদিকে কবিরাজ বাড়ি রোডে সড়ক ও জনপদ অফিস এবং বিশ্বরোড সংযোগ সড়কে বিসি দ্বারা রাস্তা নির্মাণ। কাঠপট্টি ট্রলারঘাট হতে মনোহরি পট্টি রোড পর্যন্ত রাস্তা বিসি দ্বারা মেরামত। ৮কোটি ৯৯ লাখ টাকা বরাদ্ধে গাবখান টোল প্লাজা হতে তালুকদার বাড়ি হয়ে ইছানীল স্কুল পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা ও ৩টি কালভার্ট নির্মাণ, তালুকদার বাড়ি হতে বায়তুননুর জামে মসজিদ পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা ও ৪টি কালভার্ট নির্মাণ, অতুলমাঝি খেয়াঘাট হতে বারেক ডিলারের বাড়ি হয়ে গাবখান ব্রিজ পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা নির্মাণ, মুন্সিবাড়ি রোড হতে আনোয়ারের বাড়ি পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা নির্মাণ, গাবখান ব্রিজ হতে ফুলতলা পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা নির্মাণ, নতুন কলেজ রোড হতে রূপনগর কালভার্ট পর্যন্ত চেইনেজ আরসিসি রাস্তা নির্মাণ কাজ চলমান আছে।
ইউজিআইআইপি-০৩ প্রকল্পে সাধনার মোড় হতে উপজেলা পরিষদ রাস্তা পুননির্মাণ, হরিসভা মোড় হতে খাদ্য গুদাম হয়ে বাসন্ডা ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা পুননির্মাণ, ঝালকাঠি লঞ্চঘাট হতে পৌর পানি সরবরাহ শাখা ও প্রেসক্লাব থেকে থানা ব্রিজ এবং রোনালছে রোড হতে কালীবাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুননির্মাণ, সাধনার মোড় হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে গ্ররুধাম ব্রিজ ও সাধনার মোড় থেকে জনতা ব্যাংক, নবগ্রাম রোড হতে চান্দের খাল পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ, সড়ক ও জনপদ বিভাগের হতে তৈয়ব আলী’র বাড়ি পর্যন্ত চেইনেজ রাস্তা নির্মাণ, সাধনার মোড় হতে উপজেলা পরিষদ হয়ে কাপুড়িয়াপট্টি রাস্তা, ড্রেন ও ১টি কালভার্ট নির্মাণ, হরিসভা মোড় হতে বিকনা বিকনা প্রাইমারি স্কুল পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ, সড়ক ও জনপদ হতে অ্যাডভোকেট এর বাড়ি পর্যন্ত আরসিসি ড্রেন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
ঝালকাঠি পৌরমেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার জানান, আমাদের একান্ত অভিভাবক, দক্ষিণ বাংলার প্রাণপুরুষ জননেতা আমির হোসেন আমু এমপি ঝালকাঠি উন্নয়নে খুবই আন্তরিক। তার বিচক্ষণ রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আর কার্যক্রমে ঝালকাঠিবাসী আলোর মুখ দেখেছে। ১৪দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র, সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমু’র আন্তরিকতার কারণেই ঝালকাঠি পৌর এলাকায় উন্নয়নের জোয়ার বইছে। আওয়ামী লীগের শাসনের বিগত ১০ বছরই শুধু নয় এরপূর্বে তিনি পৌরসভাকে তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পরবর্তিতে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করেছেন। তারই ঐকান্তির চেষ্টার ফসল ঝালকাঠি আধুনিক ও একটি মডেল শহরে পরিণত হয়েছে।
জলবায়ু প্রকল্প, গরুত্বপুর্ণ শহর প্রকল্প এবং ইউজিআইআইপি-০৩ প্রকল্পের মাধ্যমে ৪৫কোটি ৯১লাখ ৫৭হাজার ৮শ টাকা বরাদ্ধে অধিকাংশ কাজই সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে পৌরবাসীর স্বার্থে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ সম্পাদন করা হয়েছে। স্থায়ী উন্নয়নমূলক যেসব কাজ হয়েছে তাতে আগামী ৫০বছরেও ওইসব স্থানে কাউকে হাত দিতে হবে না বলেও প্রত্যাশা করেন তিনি।