আশাশুনিতে দু’জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান ও অশালীন ভাষায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মনোগ্রাম খুলে ফেলনোর আদেশ দিয়ে পুলিশ কর্তৃক ন্যাক্কার জনক আচরণের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। সোমবার সকালে আশাশুনি প্রেস ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
লিখিত বক্তব্য ও সাংবাদিদকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নং ২০৪৩) দীনেশ চন্দ্র সরকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা (গেজেট নং ৪১৪) আফছার আলি গাজী অশ্রুভেজা কণ্ঠে বলেন, রোববার বেলা সাড়ে ১১টার আমি আমার ডায়াং চায়না মটর সাইকেল যোগে বাড়ী থেকে আশাশুনিতে আসার সময় আশাশুনি বাইপাস হাইওয়ে ৩ রাস্তার পাশের্^ (দক্ষিণে) এসআই জুয়েল আমাকে গাড়ী থামাতে বলেন। তার নির্দেশমত গাড়ী থামাই। পরে এক কনস্টেবল সোহাগ আমাকে বলে এই গাড়ী রাস্তার পাশের্^ আন। আমি বলি কাকা কি হয়েছে বলেন? তিনি বলেন রাস্তার উপরে কথা বলবো না। গাড়ী রাস্তার পাশে আন। এরপর তিনি রুক্ষ মেজাজে বলেন এই বালের লাইট লাগাইছ কেন ? তখন আমি বলি কাকা আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তাছাড়া আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা। আমার ছেলে পুলিশে চাকরি করে। ভদ্রভাবে কথা বলেন। তখন সে বলে ওই (মুখখিস্তি) পরিচয় বাদ দে, বুকের মধ্যে ওই সব ---ছাল (মুক্তিযোদ্ধার মনোগ্রাম) গালাইছ কেন। ও সব খুলে ফেলো। এই বলে গাড়ীর লাইটটা প্লাস দিয়ে কেটে নেয়। পরে প্লাস দিয়ে হর্ণ কাটতে যায়। বাধা দিলে সে বলে দুটি হর্ণ রাখা যাবে না। আমি বলি ঘটনাটি এসপি সাহেবকে বলব। সে পান্টের চেইন খুলে দিয়ে বলে আমার --- ছিড়ে নিশ। এ সময় সেখানে শতাধিক পথচারী উপস্থিত ছিল। আশপাশের্^র দোকানদারও আমার সঙ্গে কি ব্যবহার হয়েছে, তা দেখেছে। ঘটনাটি শুধু আমার সঙ্গে ঘটে নাই। আমার আগে অপর এক মুক্তিযোদ্ধা আফসার গাজীকেও একইভাবে অপমান করা হয়েছে বলে ওই সময় জেনেছি। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা আফসার গাজীর মটর সাইকেলের সামনে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত স্টিকার ছিড়ে ফেলে দিতে উদ্যত হয় ওই পুলিশ কনস্টেবল সোহাগ। তিনি বক্তব্যের এক পর্যয়ে ডুকরে কেঁদে বিষের বোতল এক হাতে নিয়ে বলেন, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানের সাথে এহেন আচরণ আত্মহত্যার শামিল। ওই পুলিশ কনস্টেবল কোন পরিবার থেকে এসেছে, কার ইন্ধনে এসব কথা বলেছে, বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য এবং ন্যায় বিচার পাইবার জন্য প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সঠিক বিচার যদি না পায় আমি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবো। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মৌখিকভাবে থানা কর্মকর্তা ইনচার্জকে অবহিত করেছি। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা আফছার আলী গাজী, আবদুর করিম, কাত্তিক চন্দ্র মন্ডল, মাষ্টার আকবর আলীসহ প্রায় ডর্জনাধিক মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন।