জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও সাবিলা নূর অভিনীত একক নাটক ‘এক্সচেঞ্জ’। গত ১৩ নভেম্বর মাছরাঙা টেলিভিশনে প্রচার হয় এটি। প্রচারের পরই নাটকটি আলোচনায় উঠে আসে। নাটকটির নির্মাণ ও অভিনয় নিয়ে যতটা না আলোচনা হচ্ছে, তারচেয়ে বেশি চলছে নাটকটির গল্প, চিত্রনাট্য নিয়ে বিতর্ক। আর এই বিতর্কের সূচনা করেছেন শামীম রানা শামু নামে এক নির্মাতা। তার অভিযোগ, ‘এক্সচেঞ্জ’ নাটকটি তার নির্মিত একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের নকল। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে শামীম রানা শামু বলেনÑএকটি গল্পের আইডিয়া মিলতে পারে কিন্তু চিত্রনাট্য থেকে শুরু করে নায়কের নাম, সংলাপ, মোটিভ সবই মিলবে? কখনই মিলবে না। এটা ডিরেক্ট চুরি! আমার ৭ মিনিটের স্বল্পদৈর্ঘ্যরে গল্পের শুরুর দিকে নায়িকা বলেন, ‘এই চিকনা মাল, এইডা কিন্তু আমার তোরা কেউ নজর দিবি না।’ এক্সচেঞ্জ নাটকে সাবিলাও একই সংলাপ দিয়েছেন। গল্পের নায়কের নাম সাকিব। সেটাও কপি পেস্ট করে সাকিব-ই রেখে দিয়েছেন। মেয়েগুলা মোড়ে বা বিভিন্ন জায়গায় অপেক্ষা করে বিভিন্ন ছেলেদের টিজ করার জন্য। এক্সচেঞ্জ নাটকে তাই রেখেছেন। আমার গল্পে আমি নিজের আত্মোপলব্ধি থেকে যে সংলাপ দিয়েছি, অপূর্ব ভাই আরেকটু সুন্দর করে এই নাটকে বলেছেন। এবার বলেন আমার গল্পের প্রতিটি সিক্যুয়েন্স কীভাবে এখানে মিলে গেল? পার্থক্য যদি বলেন তাহলে বলব, আমারটা জিরো বাজেটের এক্সপেরিমেন্টাল কাজ আর এটা বিগ বাজেটের, ভালো আর্টিস্ট, ভালো ডিরেক্টর দিয়ে ৭ মিনিটকে ৪৫ মিনিট বানানো হয়েছে। এ ছাড়া আর কোনো পার্থক্য নেই। শামীম রানা শামুর এমন অভিযোগের পর তুমুল বিতর্ক চলছে নেট দুনিয়ায়। শামীম ছাড়াও কেউ বলছেন, টিভি সিরিয়াল আবার কেউ বলছেন, চলচ্চিত্রের গল্প নকল করে এই নাটক নির্মাণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে যখন জলঘোলা দারুণভাবে হচ্ছে তখন মুখ খুলেছেন নাটকটির রচয়িতা মেজবাহউদ্দিন সুমন। এ নাট্যকার বলেনÑ‘এক্সচেঞ্জ’ নাটক নিয়ে নানাজনে নানা দাবি করছেন। ২০১৮ সালে একজন নাটক বানিয়েছেন, সে বলছে এটা তার গল্প। আরেকজন বললেন, ২০১৭ সালে শর্টফিল্ম বানাইছে, এটা তারই কনসেপ্ট। এখন প্রশ্ন হলো ২০১৭ সালে শর্টফিল্ম হওয়ার পর ২০১৮ সালে যখন নাটক নির্মিত হলো তখন তাহলে ২০১৭ সালে নির্মিত শর্টফিল্মের নির্মাতা কী ঘুমিয়েছিলেন? আর সেই ঘুম ২০২০ সালে ভেঙেছে! তিনি আরো বলেনÑবলিউডের অন্তরা মালি কোনো দিন এসে হয়তো বলবেন, এটা আমার একটা ফ্লপ সিনেমার নকল। নব্বই দশকে বিটিভিতে যে নাটক হইছিল তার প্রযোজকের নামতো জানি না। কিন্তু সেও এসে বলতে পারেন এটা তার নকল। মালায়ালাম ভাষায় এমন একটি সিনেমা আছে সেই লোকও এসে বলতে পারেন এটা তার নকল। কলকাতায় এমন একটি মুভি আছে, তারাও ধরতে পারেন আমারে! এ ধরনের গল্প নিয়ে যুগ যুগ ধরে কাজ হয়ে আসছে। তা উল্লেখ করে মেজবাহউদ্দিন সুমন বলেনÑকনসেপ্টটা আসলে গরীবের বাউজ হয়ে গেছে। যে কেউ এসে বলতেছে এটা তার। কিন্তু গাধাগুলোকে কে বোঝাবে এ ধরনের কনসেপ্টের কাজ যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। এটা নতুন কিছু নয়। এতদিন ধরে এতজনে এ কী ধরনের কাজ করে গেল তখন কেউ এটা নিয়ে কোনো কথা বলল না! আর ঝাড়ের বড় বাঁশটা হইলেই বিপদ, সবাই ওইটা ধরে টানাটানি করে, নিজের করে নিতে চায়। তবে অভিযোগকারী নির্মাতা শামীম রানা শামু আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছেন। বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেনÑঅফিসিয়ালি সরি এবং আমার গল্প থেকে কাজটা করেছেন তা স্বীকার করে যথাযথ মর্যাদা না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। আশা করি, আপনি (মেজবাহ উদ্দীন সুমন) ডিরেক্টর টিমের সঙ্গে আলাপ করে ভালোটাই করবেন।