অস্ট্রেলিয়ান আন্তর্জাতিক মৌসুমের শুরুর দিন। ধারণক্ষমতার অর্ধেক হলেও মাঠে ফিরল দর্শক। সব মিলিয়ে সিডনি ক্রিকেট মাঠে দেখা গেল উৎসবের আবহ। সেই উৎসব আরও রাঙিয়ে তুলল অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিংয়ের বর্ণিল ছটায়। দুর্দান্ত সেঞ্চুরি উপহার দিলেন অ্যারন ফিঞ্চ, স্মিথ মাতালেন ঝড়ো সেঞ্চুরিতে। সঙ্গে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ক্যামিওতে অস্ট্রেলিয়া গড়ল রানের পাহাড়। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ভারতের বিপক্ষে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৭৪ রান তুলেছে অস্ট্রেলিয়া। ভারতের বিপক্ষে এটিই অস্ট্রেলিয়া সর্বোচ্চ ইনিংস। ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে ৩৫৯ ছিল আগের সর্বোচ্চ। সপ্তদশ ওয়ানডে সেঞ্চুরিতে ১২৪ বলে ফিঞ্চ করেন ১১৪। অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় দ্রুততম ব্যাটসম্যান হিসেবে ছুঁয়েছেন ৫ হাজার ওয়ানডে রানও। ১১ চার ও ৪ ছক্কায় স্মিথ সেঞ্চুরি করেছেন ৬৬ বলে ১০৫। শেষ দিকে ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকে এসেছে ১৯ বলে ৪৫। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়াকে দারুণ শুরু এনে দেন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার। শুরুতে বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের পথে না হেঁটে দুজনই রান তোলেন ঝুঁকিহীন পথে। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে রান আসে ৫১। এরপর ক্রমেই দুজন একটু করে বাড়ান রানের গতি। ৬৯ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন ফিঞ্চ, ৫৪ বলে ওয়ার্নার। উদ্বোধনী জুটিতে দুজনের একাদশ শতরানের জুটি থামে ১৫৬ রানে গিয়ে। মোহাম্মদ শামির বলে ওয়ার্নার উইকেটের পছেনে ধরা পড়েন ৭৬ বলে ৬৯ করে। দ্বিতীয় উইকেটে ফিঞ্চ ও স্মিথে জুটিতেও আসে শতরান। এবার অনেক গতিময়তায়, মাত্র ৭৩ বলেই ১০৮ রানের জুটি। ১১৭ বলে সেঞ্চুরি স্পর্শ করে ফিঞ্চ। অ্যাডাম গিলক্রিস্টের ১৬ সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে তিনি এখন অস্ট্রেলিয়ার চতুর্থ সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিয়ান। শতরানের পর রান বাড়ানোর চেষ্টায় ফিঞ্চ বিদায় নেন ১১৪ রানে। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি মার্কাস স্টয়নিস। তবে অস্ট্রেলিয়ার রানের গতি আরও বাড়াতে সমস্যা হয়নি। দারুণ সব ক্রিকেটীয় শটের পাশাপাশি উদ্ভাবনী শটের মহড়ায় স্মিথ ও ম্যাক্সওয়েল এলোমেলো করে দেন ভারতীয় বোলিং। ২৫ বলে ৫৭ রানের জুটি গড়েন দুজন। স্মিথ ইনিংসের শুরুতে এগিয়েছেন বলপ্রতি রান তুলে। এরপর হুট করেই তুমুল আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। ৬ বলের মধ্যে ৫ বাউন্ডারিতে ফিফটি স্পর্শ করেন ৩৬ বলে। দুই দফায় বেঁচেও গেছেন তিনি। ৩৭ রানে ক্যাচ নিতে পারেননি শিখর ধাওয়ান, ৬৩ রানে কঠিন ক্যাচ ছাড়েন যুজবেন্দ্র চেহেল। রক্ষা পেয়ে ভারতকে ভুগিয়ে ৬২ বলেই স্মিথ পৌঁছে যান তিন অঙ্কে। অস্ট্রেলিয়ার যা তৃতীয় দ্রুততম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। শেষ দিকে অ্যালেক্স কেয়ারি করেন ১৩ বলে ১৭। শেষ ১০ ওভারে অস্ট্রেলিয়া তোলে ১১০ রান। ভারতীয় বোলারদের দুর্দশার দিনে খানিকটা ভালো করেছেন কেবল মোহাম্মদ শামি (৩/৫৯)। বাকি ৪ জনই রান দিয়েছেন দেদার। বিকল্প বোলারও ছিল না একাদশে। ১০ ওভারে ৮৯ রান গুনেছেন চেহেল, ওয়ানডেতে কোনো ভারতীয় স্পিনারের সবচেয়ে খরুচে বোলিং।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ৩৭৪/৬ (ওয়ার্নার ৬৯, ফিঞ্চ ১১৪, স্মিথ ১০৫, স্টয়নিস ০, ম্যাক্সওয়েল ৪৫, লাবুশেন ২, কেয়ারি ১৭*, কামিন্স ২*; শামি ১০-০-৫৯-৩, বুমরাহ ১০-০-৭৩-১, সাইনি ১০-০-৮৩-১, চেহেল ১০-০-৮৯-১, জাদেজা ১০-০-৬৩-০)।