ফরিদপুরে সেফ থেকে পালিয়েছিলেন সাত তরুনী । এর মধ্যে শনিবার সকালে এক তরুনীকে আটক করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে তদন্তের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উদ্যোগে। পাশাপাশি সেফ হোমের সাথে জড়িত কর্মকর্তা ও কর্মচারী মিলিয়ে ১৪ জনকে শো-কজ করা হয়েছে।
এ সেফ হোমটির নাম ‘মহিলা ও শিশু কিশোরী হেফাজতিদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্র’। সমাজ সেবা অধিদপ্তর পরিচালিত এ সেফ হোমটি ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা মহল্লার এলাকায় সোহওয়ার্দী লেক পাড়ের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত।
ওই সেফ হোম সুত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেখানে মোট ৭২জন নিবাসী ছিলেন। এর মধ্যে থেকে সাতজন গত শুক্রবার ভোর চারটার দিকে নিরাপত্তার দায়িত্ব দুই আনসার সদস্য সালমা বেগম (২৬) ও বিউটি আক্তারের (২৭) ঘুমিয়ে থাকার সুযোগে গ্রিল ভেঙ্গে পাচিল টপকে পালিয়ে যায়।
পালিয়ে যাওয়া ওই সাতজন হলেন রাজবাড়ীর সোনালী আক্তার সাথী (২১), মেঘলা (১৪), রাজবাড়ী গোয়ালন্দের আলিশা আক্তার তারা (২০), মাদারীপুরের লাকী আক্তার সুরমা (২০), শরীয়তপুরের আছিয়া (১৭) এবং গোপালগঞ্জের তামান্না আক্তার (১৬) ও ময়না (১৮)।
গত শুক্রবার দুপুরে সেফ হোম থেকে জানানো হয় তাদের চারজন নিবাসী কর্মরত আনসারদের ঘুমিয়ে পড়ার সুযোগে গিল ভেঙ্গে পাচিল টপকে পালিয়ে গেছে। সেফ হোম থেকে বলা হয় পালিয়েছে চার জন নয় মোট সাত জন।
এই সাত তরুণী সকলে ভবঘুরে হিসেবে উল্লিখিত জেলা ও উপজেলায় পুলিশের হাতে আটক হয়ে আদালতের মাধ্যমে এ সেভ হোমে রয়েছেন। এদের মধ্যে আলিসা আছেন ২০১৫ সাল থেকে। দুইজন এসেছে চলতি বছর। বাকিরা ও তিন কিংবা চার বছর ধরে আছেন। এদের আইনগত অভিভাবক না পাওয়ায় সেফ হোমেই তাদের রাখা হচ্ছিল।
সেফ হোমের উপ তত্ত্বাবধায়ক রুমানা আক্তার বলেন, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত দুই আনসার সদস্য ঘুমিয়ে থাকার সুবাদে পালিয়ে যাওয়ার এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া ওই নিবাসীদের সন্ধানে পুলিশের পাশাপাশি সেভ হোম কর্তৃপক্ষও কাজ করছেন।
ফরিদপুর গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুনীল কুমার কর্মকার বলেন, পালিয়ে যাওয়া ওই সাত তরুণীর মধ্যে একজন আছিয়াকে শনিবার সকালে শহরের বিল মাহমুদপুর এলাকা থেকে পুলিশ আটক করেছে।
ফরিদপুর সমাজ সেবা অধিপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আলী আহসান আরও বলেন, নিবাসীদের পালিয়ে যাওয়ার এ ঘটনায় ওই সেফহোমে কর্মরত ১০জন কর্মকর্তা কর্মচারী এবং তিনজন আনসার সদস্যসহ মোট ১৪জনকে কারণ দর্শানো নোটিশ (শো-কজ) দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনাটি তদন্ত করে দেখার জন্য সহকারি উপ-পরিচালক আবু সাইদুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন সহকারি উপ-পরিচালক নূরুল হুদা ও তাসফিয়া তাসরিণ। আগামী তিন দিনের মধ্যে শোকজ ও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।