সরাইলে ময়না বেগম (৩২) নামের এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। গত শনিবার সকালে উপজেলার পাকশিমুল গ্রামে মায়েশিয়া প্রবাসীর স্ত্রী রাগ করে কীটনাশক সেবন করে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বামীর স্বজনরা। এর আগেও দুইবার বিষ পান করে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিল ওই গৃহবধূ। বাবার বাড়ির ুপুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছেন। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ২৮ বছর আগে মালেশিয়ায় চলে যান পাকশিমুল গ্রামের ছায়েব আলীর ছেলে মুলু মিয়া (৪৩)। প্রেম করে গত ১৩ বছর আগে বিয়ে করেন প্রতিবেশী ছোট আবু’র মেয়ে ময়না কে। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবন ভালই কাটছিল। তাদের রয়েছে জান্নাত (১০), লামিয়া (০৮) ও সাওম (০৭) নামের তিনটি সন্তান। স্বামীর অনুপস্থিতিতে তিন সন্তানকে নিয়ে চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি আলিশান ভিল্ডিং-এ থাকতেন ময়না। সম্প্রতি নিজেদের ব্যক্তিগত বিষয়াদি নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মুঠোফোনে কথা কাটাকাটি হত। উভয়ের মধ্যে চলত মান অভিমান। গত শনিবার সকালে নিজ কক্ষে বসে হঠাৎ করে বমি ও অস্বস্থ্যিতে ছটফট করছিলেন ময়না। ময়নার কন্যাশিশু লামিয়া দৌঁড়ে গিয়ে চাচা চাচিসহ বাড়ির লোকজনকে বিষয়টি জানায়। সকলেই দৌঁড়ে আসেন ময়নার ঘরে। ময়না তখন চিৎকার করে বলেন, ‘আপনারা আমাকে বাঁচান। আমি কীটনাশক খেয়ে ফেলেছি। আর পারছি না আমি।’ ময়নার স্বামীর ও বাবার বাড়ির লোকজন মিলে তাকে সরাইল হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি দেখে তাকে জেলা সদর হাসাপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ময়নাকে মৃত ঘোষণা করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশ নিহত ময়নার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। এ ঘটনার জন্য পরকিয়া প্রেমকে দায়ী করছেন কেউ কেউ। তবে শিশু লামিয়া বলে, নানা বাড়ি থেকে এসে দেখি আম্মা বমি করছে। পরে সবাইকে ডেকে আনি। আর নিহত ময়নার মা বলেন, আমি শুনেছি রাগ করে আমার মেয়ে বিষ খাইছিল। আমার তিনটা নাতি নাতনির এখন কি উপায় হবে। ময়না বেগমের প্রতিবেশী মনা মিয়া (৪৫) বলেন, আগেও দুইবার বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল ময়না। অনেক দিন আগে কাউকে না জানিয়ে হঠাৎ করে মুলু দেশে আসায় ক্ষোভে গভীর রাতে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল ময়না। পরে সরাইল হাসপাতালে নিয়ে বিষ বের করেছিলাম। এর কিছু দিন পর আবারও বিষ পান করলে স্থানীয় চিকিৎসক রফিক মিয়া বিষ বের করে জীবন বাঁচিয়ে ছিলেন। সরাইল থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) এ এম এম নাজমুল আহমেদ বলেন, চিকিৎসারত অবস্থায় সদর থানায় মৃত্যুবরণ করায় সেখানকার পুলিশই ময়না তদন্তের ব্যবস্থা করেছেন। তবে রিপোর্ট আমাদের থানায়ও আসবে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন ধরণের অভিযোগ পায়নি।