আসলাম আলি নিজের বাড়ি নেই থাকেন জেলা সদরের প্রগতি পাড়ায় ভাড়া করা এক বাসায়। বাবা আকবর আলি। পেশায় একজন দর্জি। বাবা দর্জি হওয়ায় তার ছেলে আসলাম আলিও এ পেশায় জড়িয়ে পড়েন। এ পেশায় যা আয় হয় তা দিয়ে চলে না সংসার। তবুও পেশাকে আঁকড়ে ধরে পথচলা। শহরের মড়াল সংঘ মোড়ে আঁখি টেইলার্স নামে রয়েছে একটি দর্জি দোকান। করোনা দূর্যোগ থেকে মানুষকে রক্ষায় তিনি নিজ উদ্যোগে বিতরণ করে চলেছেন নিজের তৈরী মাস্ক। বিনে পয়সায় তিনি ওই মাস্ক মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিচ্ছেন। তার দোকানের সামনের সড়কে মাক্সবিহীন লোক চোখে পড়লেই ছুটে গিয়ে নিজ হাতের তৈরী মাক্স পড়িয়ে দেন তিনি। করোনা শুরু থেকে এভাবে তিনি কয়েক হাজার মাক্স বিতরণ করেছেন মানুষের মাঝে। ১৪ বছর বয়স থেকে দর্জির কাজ শিখতে শুরু করেন আসলাম। এরপর কাজ করেছিলেন বিভিন্ন দোকানে। এমন কাজের সঞ্চয়ে জেলা শহরের মড়াল সংঘ মোড়ে ‘আঁখি টেইলার্স’ নামে মেয়েদের পোষাক তৈরীর দোকান দিয়ে বসেন তিনি। এখন দোকানে তিনিসহ কাজ করছেন তার বড় ছেলে মনোয়ার হোসেন। নিজের বাড়ি নেই, থাকেন শহরের প্রগতি পাড়ায় একটি ভাড়া বাসায়। দোকানের সামান্য আয়ে বাড়ি ভাড়া মিটিয়ে দুই ছেলে এক মেয়েসহ পাঁচ সদস্যের সংসার চালাচ্ছেন অতিকষ্টে। সে আয়েও ভাঁটা পড়েছে করোনা সংকটে। এরপরও মানুষের সেবা করার মানষিকতা তার ভেতরে কাজ করছে।
তিনি জানান, করোনার দূর্যোগ শুরু হলে মানুষ অনেকটাই নিরুপায় হয়ে পড়েন। দূর্যোগ মোকাবেলায় অনেকেই সহযোগিতরা হাত বাড়িয়ে দেন। নিজ অবস্থান থেকে অসহায় মানুষকে সহযোগিতার ইচ্ছে জাগে তার। এ মনোভাব থেকে শুরু করেন কম দামে বিভিন্ন দোকান থেকে ঝুট কাপড় সংগ্রহ করে কাজের ফাঁকে নিজ হাতে মাক্স তৈরী এবং বিতরণের কাজ। তিন স্তর বিশিষ্ট প্রতিটি মাক্স তৈরীতে খরচ হচ্ছে অন্তত ৪০ টাকা। এসব মাক্স প্রতিদিন সামর্থ অনুযায়ী বিতরণ করছেন দরিদ্র এবং নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে। তিনি বলেন, এক সময়ে ছাত্রলীগের আদর্শ ধারণ করে সক্রিয় ছিলাম বিভিন্ন মিছিল মিটিং আর সমাবেশে। সে সময়ে করেছিলাম মানব সেবার অনেক কাজ। সে মানষিকতা বহন করেই চলছি। আর সেটি থেকেই করোনার এ দূর্যোগে আমার সামর্থের মধ্যে করোনা সংক্রমণ রোধে দরিদ্র মানুষের মাঝে মাক্স বিতরণ অব্যাহত রেখেছি।