বুধবার বেলা সোয়া ১১টা। রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় অনান্য দিনের মতো মানুষের ছিলো কর্মব্যস্থতা। হঠাৎ করে সাইরেন বাজিয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি আসতে দেখে মানুষ থমকে যায়। সবার মনে একটা প্রশ্ন কি হলো? ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যখন লক্ষ্মীপুর মোড়ে অবস্থিত রুপালী ব্যাংক সামনের গাছে লেডার ভিড়িয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ওপরে উঠে যায় তখন সবার চোখ গাছে কেউ আটকা পড়েছে কিনা তা খুজতে থাকে। কিন্তু যখন দেখে যে নিজের প্রাণ বাজি রেখে প্রায় ৭০ ফুট ওপর থেকে গাছটির পাশে থাকা উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের তার ডিঙ্গিয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা কোন মানুষকে নয়, একটি কাককে উদ্ধার করে নিয়ে আসছে। তখনই অনেকের চোখে আনন্দ অশ্রু দেখা যায়।
এ সময় কেউ কেউ হাততালি দিয়ে উচ্ছাসিত হয়ে বলে উঠে, ফায়ার সার্ভিস আসলেই একটি জীবন রক্ষাকারী বাহিনী। একটি জীবনের মূল্য তাদের কাছে আছে, হোক না সে কোন পশু বা পাখি। আবার কেউ কেউ মন্তব্য করেন, কি আর করবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কাজ নাই, তাই নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সামান্য একটি কাককে উদ্ধার করছে।
জানা গেছে, রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় রুপালী ব্যাংকের সামনের গাছে কোন একসময় সুতার সঙ্গে একটি কাক আটকা পড়ে। সেই সুতার বেড়াজাল থেকে নিজেকে উদ্ধারের জন্য কাকটি অনেক চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু মুক্তির জন্য যতই চেষ্টা করে, ততই তার পাখা সুতার সঙ্গে আটকে যেতে থাকে। এমন নির্মম দৃশ্য দেখে ওই এলাকার উজ্জ্বল হোসেন। তখন কাকটির অসহায়ত্ব দেখে তিনি তা উদ্ধারের জন্য প্রথমে ৯৯৯ এ ফোন দেন। তারপর সেখান থেকে নাম্বার নিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদর দপ্তরে খবর দেন। এরপর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদর দপ্তরের স্টেশন কর্মকর্তা লতিফুর বারীর নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থলে পৌছে প্রায় ১ঘন্টা চেষ্টা করে কাকটিকে উদ্ধার করে। পরে খাবার ও প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে একজন পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে কাকটিকে উদ্ধারের জন্য সংবাদদাতা সেই উজ্জ্বল হোসেনের কাছে কাকটি হস্তান্তর করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদর দপ্তরের স্টেশন কর্মকর্তা লতিফুর বারী।