লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত ৭ কোটি ২০ লক্ষ টাকার প্রকল্প সিন্ডিকেটে ৪জন ঠিকাদারকে অংশগ্রহনের সুযোগ দিয়ে টেন্ডার বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুর ও বিকেলে বঞ্চিত ঠিকাদাররা পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী ও কার্যসহকারীকে অবরুদ্ধ করে টেন্ডার বাতিলের দাবী তোলে। সৃষ্ট ঘটনায় মেয়র মুঠোফোনে বলেন,আমার পরবর্তি মেয়র বিষয়গুলি দেখবে বলে সংযোগ কেটে দেয়।
বিভিন্ন সুত্রে জানায়, রামগঞ্জ পৌরসভার তালিকাভুক্ত ২৫ জন ঠিকাদারের মধ্যে ২১ জন ঠিকাদার সকল প্রক্রিয়া সম্পর্ন করে পৌরসভার কার্যসহকারি নুর হোসেনের কাছে নবায়ন ফি জমা দেয়। মেয়র কৌশলে তাদের লাইসেন্স আটকে রেখে শুধু তার সিন্ডিকেটের জয় এন্টারপ্রাইজ, এস এস ট্রেডার্স, এন বি ট্রের্ডাস, আলমগীর ট্রেডার্স এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে লাইসেন্স নবায়ন করে ইজিপিতে টেন্ডারের সুযোগ করে দিয়ে ৭ কোটি ২০ লক্ষ টাকার কাজ ভাগবাটোয়ারা। মেয়র টেন্ডার ভাগবাটোয়ারীকরার উদ্দেশ্যে শুধু অখ্যাত পত্রিকাতে বিজ্ঞাপ্তি দিয়েছে তা নয়,নিজস্ব নোটিস বোর্ডেও নোটির্স কপি দেয়নি।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ও ঠিকাদার মেহেদী হাসান শুভ বলেন, পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন সংক্রান্ত একটি টেন্ডার ১৬ নভেম্বর অখ্যাত বাংলা ও ইংরেজি দৈনিকে মোট ১১টি গ্রুপে টেন্ডার আহ্বান বিঞ্জপ্তি প্রকাশিত হয়। ইজিপি সিস্টেম অনুযায়ী টেন্ডারে অংশগ্রহণ করতে ২১জন ঠিকাদারের লাইসন্সে নবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় কাগপত্র ও ফি জমা দেওয়া হয়। কিন্তু মেয়র সিন্ডিকেটে ৪ ঠিকাদারের লাইসেন্স নবায়ন করে ১১টি প্রকল্পের বিপরিতে ৬% হারে সমঝোতা করে ইজিপিতে টেন্ডারে অংশগ্রহণ করেন।
মেসার্স মমতাজ ট্রের্ডাস, সাফওয়া ট্রেডার্স, সালমান ট্রেডার্স, লামিয়া এ- তানবির ট্রেডার্স, ভুঁইয়া ট্রেডার্স সহ ২১ জন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিকরা জানান, আপডেট টেন্ডার আইন অনুযায়ী সব সরকারি টেন্ডার ইজিপিতে করার নিয়ম থাকলেও মেয়র আমাদের লাইসেন্স নবায়নের কথা বলে আটকে রেখে খুবই অল্প প্রচার সংখ্যার বাংলা দৈনিক ও অপরিচিত একটি ইংরেজি দৈনিকে টেন্ডার আহবান করে শুধু তার পচন্দের ৪টি লাইসেন্স নবায়ন করে তাদের লাইসেন্সে প্রকল্প ভাগ বাটোয়ারা করে নেই। এখানে আমাদেরকে বঞ্চিত করে মেয়র ৬%হারে বিশাল লেনদেন করেছেন। সেকারনেই ঘোষিত টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করে অবিলম্বে রিটেন্ডার করার জন্য স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।
পৌরসভা কার্যসহকারি নুর হোসেন জানান, নিবন্ধনকৃত ২১ জন ঠিকাদার লাইসেন্স নবায়নের ফি আমার কাছে জমা দিয়েছে। আমি সকল প্রক্রিয়া শেষ করে মেয়র সাহেবকে বার বার বলার পরও তিনি নবায়ন করেনি। এখানে আমার করার কিছুই ছিলো না।
রামগঞ্জ পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন জানান, নিয়ম মোতাবেক পত্রিকায় টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। ২১টি লাইসেন্স কেন নবায়ন হয়নি সেটা আমার জানা নাই। টেন্ডারে অংশগ্রহণ করা শান্তা ট্রেডার্স সবগুলো প্রকল্পে লয়েস্ট হলে তার লাইসেন্স নবায়ন না থাকায় সেটি বাতিল হবে।
রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবুল খায়ের পাটোয়ারী মুঠোফোনে বলেন, বঞ্চিত ঠিকাদারগন তাদের লাইসেন্স নবায়ন না হলে তারা আমার কাছে আসা উচিত ছিল। আমি ঢাকা থেকে আসার পর তাদের লাইসেন্স নবায়ন করে দিবো। এখন নবায়ন করলেও তো তারা এ টেন্ডারে অংশগ্রহনের সুযোগ নাই এবং ভাগবাটোয়ারাসহ এসব বিষয় প্রশ্ন করলে তিনি বলেন আমার পরবর্তি মেয়র ক্ষমতা আসলে তিনি ব্যবস্থা নিবে।